অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে লক্ষ্যের চেয়ে ১৩% বেশি রপ্তানি

পাট ছাড়া অন্য প্রায় সব খাতেরই রপ্তানি আয় বাড়ছে। সে কারণে সামগ্রিকভাবে গতি ধরে রেখেছে দেশের পণ্য রপ্তানি। যদিও ইউরোপে নতুন করে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। আবার মহামারি এই ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। তবে নতুন করে করোনা সংক্রমণ ও নতুন ধরনটি রপ্তানিতে এখনো সেভাবে প্রভাব ফেলেনি।

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাস (জুলাই-নভেম্বরে) ১ হাজার ৯৭৯ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, দেশীয় মুদ্রায় যা ১ লাখ ৬৮ হাজার ২১৫ কোটি টাকার সমান। এই আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৪ দশমিক ২৯ শতাংশ বেশি। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে পণ্য রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৭৪৭ কোটি ডলার। অবশ্য শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩ দশমিক ২৭ শতাংশ রপ্তানি বেশি হয়েছে।

এদিকে গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ৪০০ কোটি ডলারের বেশি পণ্য রপ্তানি হয়। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে গত নভেম্বরে ৪০৪ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, দেশীয় মুদ্রায় যা ৩৪ হাজার ৩৪০ কোটি টাকার সমান। এই আয় গত বছরের নভেম্বরের চেয়ে ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি। যদিও অক্টোবরে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৬০ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) গতকাল বৃহস্পতিবার পণ্য রপ্তানি আয়ের এই হালনাগাদ তথ্য (সাময়িক) প্রকাশ করেছে।

বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল ৩ হাজার ৮৭৬ কোটি ডলারের পণ্য। আর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের পণ্য আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৪ হাজার ৩৫০ কোটি ডলার। এখন পর্যন্ত রপ্তানি আয়ের যে প্রবণতা তাতে চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে করোনার নতুন ঢেউ নিয়ে কিছুটা শঙ্কায় রয়েছেন রপ্তানিকারকেরা।

ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে তৈরি পোশাক ছাড়াও কৃষি প্রক্রিয়াজাত, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হিমায়িত খাদ্য, হোম টেক্সটাইল ও প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। ফলে সামগ্রিক পণ্য রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তবে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি আয় কমেছে সাড়ে ১৭ শতাংশ।

বরাবরের মতোই পণ্য রপ্তানিতে শীর্ষ স্থানে রয়েছে তৈরি পোশাক। অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসের মোট রপ্তানির ৮০ শতাংশ পোশাক খাত থেকে এসেছে। রপ্তানি হয়েছে ১ হাজার ৫৮৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। এই আয় গত বছরের চেয়ে ২২ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেশি। পোশাক খাতের মধ্যে নিট পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে ২৬ শতাংশ হারে। রপ্তানি হয়েছে ৮৯৮ কোটি ডলারের নিট পোশাক। অন্যদিকে ওভেন পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৬৮৭ কোটি ডলারের। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ১৯ শতাংশ।

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ৫৫ কোটি ৬৪ লাখ ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া ৫৬ কোটি ৩৬ লাখ ডলারের হোম টেক্সটাইল রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ২৫ শতাংশ।

এ ছাড়া চলতি বছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে ৪৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলার চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে ৫ কোটি ৬৪ লাখ ডলারের কাঁচা চামড়া, ১২ কোটি ১১ লাখ ডলারের চামড়া পণ্য এবং ২৮ কোটি চামড়ার জুতা রয়েছে। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭ শতাংশ বেশি। অবশ্য পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৪৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের। এই আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ কম।

Facebook Notice for EU! You need to login to view and post FB Comments!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here