ইসরায়েলি বন্দরগুলোয় জাহাজজট বাড়ছে

ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘর্ষ গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলছে। চলমান সংঘর্ষের জেরে ইসরায়েলের বন্দরগুলোতে দেখা দিচ্ছে জাহাজজট।

হামাসের হামলার পর গাজার নিকটবর্তী আস্কলন বন্দরের কার্যক্রম তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। সেসঙ্গে আসদোদ বন্দর কর্তৃপক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ পণ্য পরিবহনের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করায় জাহাজ চলাচলের গতি শ্লথ হয়ে যায়। 

রোববার (১৫ অক্টোবর) শিপ ট্র্যাকিং ও মেরিটাইম তথ্য প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান মেরিন ট্রাফিক জানায়, আসদোদ বন্দরগামী পণ্য ও ড্রাই বাল্ক কার্গোবাহী অন্তত তিনটি জাহাজ যাত্রা থামিয়ে বর্তমানে নিকটবর্তী জলসীমায় অবস্থান করছে। এছাড়া তেলের ট্যাংকার ও কনটেইনারবাহী আরও তিনটি জাহাজ আসদোদ বন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে।

মেরিনট্রাফিকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ১৩টি কার্গো, কনটেইনার ও ড্রাই বাল্কবাহী জাহাজ আসদোদ বন্দরের অভ্যন্তরে নোঙর করে আছে। তবে ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে ভিন্ন কথা জানায় আসদোদ বন্দর কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের বিবৃতি অনুযায়ী, সংঘর্ষ চলাচালীন সময়েও বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতে পরিচালিত হচ্ছে।

ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় হাইফা বন্দর ড্রাই বাল্কসহ নানা ধরনের কার্গো হ্যান্ডেলিং করে থাকে। পৃথক একটি তথ্যে জানা যায়, হাইফা বন্দরে বর্তমানে তিনটি ড্রাই বাল্কবাহী জাহাজ অপেক্ষমাণ রয়েছে। যদিও রোববার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, জনবল ও কর্মক্ষমতার ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও সাপ্তাহিক ছুটির দিনসহ সব দিনই বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত ছিলো।   

আসদোদ বন্দরগামী কিছু কার্গো জাহাজ বর্তমানে গতিপথ বদলে হাইফা বন্দরে এসে ভিড়ছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের দাবী, সেসব জাহাজ এবং অন্যান্য কার্গোর পণ্য খালাসের জন্য সর্বোচ্চ সক্ষমতায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে হাইফা। 

উল্লেখ্য যে, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতেও ইসরায়েলি বন্দরগুলোয় জাহাজ ভিড়িয়ে পণ্য ওঠানামা করতে বিশ্বের অন্যান্য বন্দরের তুলনায় অধিক সময় ব্যয় হয়। গত সপ্তাহে শিপিং কোম্পানি এমএসসি জানায়, হামাস-ইসরায়েলের সংঘর্ষের জেরে বন্দরগুলোয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদারের করার পাশাপাশি শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। এর ফলে জাহাজ চলাচলের দীর্ঘসূত্রিতা বর্তমানে আরও প্রলম্বিত হচ্ছে।

আসদোদ ও হাইফা ইসরায়েলের প্রধান ও ব্যস্ততম দুটি বন্দর। অনলাইন লজিস্টিকস প্ল্যাটফর্ম কনটেইনার এক্সচেইঞ্জ জানায়, বৈশ্বিক কনটেইনার থ্রুপুটের মাত্র শূন্য দশমিক চার শতাংশ এই বন্দর দুটি দিয়ে সংগঠিত হয়। আসদোদ ও হাইফা বন্দর বৈশ্বিক থ্রোপুটে তেমন প্রভাব না রাখলেও ইসরায়েলের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো চলমান সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে এই অঞ্চলের জাহাজ চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবার আশঙ্কা রয়েছে।

চলমান সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে এবং দীর্ঘায়িত হলে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দুইটি বাণিজ্যপথ সুয়েজ খাল এবং হরমুজ প্রণালী ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে মনে করেন কনটেইনার এক্সচেইঞ্জের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্রিশিয়ান রোউল্ফ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here