৩৯৩ কোটি টাকার ২৪টি যন্ত্রপাতি যোগ হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বন্দরসহ বাংলাদেশের সক্ষমতা বেড়ে গেছে। আমাদের পদ্মা সেতু, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর, বে-টার্মিনাল, পায়রা বন্দর এগুলো আমাদের সক্ষমতার উদাহরণ। দেশ-বিদেশে নয়, আমরা বিশ্বের সাথে থাকতে চাই। বিশ্বের সুনামধন্য দেশগুলো চট্টগ্রাম বন্দর বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। দেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করে আমরা এগিয়ে যাব। নৌপরিবহন খাত এগিয়ে যাচ্ছে। মেরিটাইমকে বাদ দিয়ে স্মার্ট ও উন্নত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে বিষয়টির প্রতি জোর দিয়েছেন।

প্রতিমন্ত্রী রবিবার চট্টগ্রাম বন্দরের সংগৃহীত সাত ধরনের ২৪টি যন্ত্রপাতি উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী পরে বন্দর ট্রেনিং কমপ্লেক্সে স্থাপিত ট্রেনিং সিমুলেটর ও নবনির্মিত অফিসার্স ডরমেটরি ভবন উদ্বোধন করেন। সিমুলেটর ক্রয়ে ব্যয় হয়েছে ২৩ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। সিমুলেটর রিপেয়ার, মেইনটেনেন্স, ট্রেনিং ও খুচরা যন্ত্রাংশ সংগ্রহে খরচ হয়েছে এক কোটি সাতাশি লাখ টাকা। অফিসার্স ডরমেটরি ভবনটি ১০ তলা বিশিষ্ট ৩২ ইউনিটের।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মোস্তফা কামাল, চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করার জন্য প্রায় ৯১৪ কোটি টাকা দিয়ে ১০৪ টি যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রায় ৩৯৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা মূল্যের সাত ধরনের ২৪টি যন্ত্রপাতি বন্দরের অপারেশনাল কাজে যুক্ত হয়েছে। অবশিষ্ট যন্ত্রপাতি পর্যায়ক্রমে যুক্ত হবে।

নতুন সংগৃহিত যন্ত্রপাতির মধ্যে রয়েছে ২৪৩ কোটি টাকা মূল্যের চারটি গ্যান্ট্রি ক্রেন, ৭০ কোটি টাকা মূল্যের ছয়টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন, ১৪ কোটি টাকায় চারটি রিচ স্ট্যাকার, ২৫ কোটি টাকার চারটি ভেরিয়েবল রিচ ট্রাক, সাত কোটি টাকার দুটি কনটেইনার মুভার, ২০ কোটি টাকার দুটি মোবাইল ক্রেন (১০০ টন) এবং ১১ কোটি টাকায় দুটি মোবাইল ক্রেন (৫০ টন)। ক্রয়কৃত চারটি কি গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ বন্দরের বহরে বর্তমানে ১৮ টি গ্যান্ট্রি ক্রেন রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে ২০২২-২৩ অর্থবছরে কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩০ লাখ ৭ হাজার ৩৪৪ টিইইউস, জেনারেল কার্গো ওঠানামা হয়েছে ১১ কোটি ৮২ লাখ ৯৬ হাজার ৭৪৩ টন। জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছে ৪ হাজার ২৫৩টি।

প্রতিমন্ত্রী পরে বন্দর স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩৬তম দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশ অন্ধকারে চলে গিয়েছিল। দেশ আলোর মুখ দেখেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন অন্ধকার থেকে আলোর পথে উঠে এসেছে। আমাদের আলোর পথের দিশারী হলেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ বর্তমানে মান, মর্যাদা নিয়ে অবস্থান করছে। বঙ্গবন্ধু অতিদরিদ্র বাংলাদেশকে হিমালয়সম উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন, সেই হিমালয় থেকে ৭৫ এ বাংলাদেশ অন্ধকারের দিকে ধাবিত হয়। এখন আমরা গর্ব করে বলতে পারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অন্ধকার থেকে আলোর পথে ধাবিত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট সেলফি তুলতে চায়, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নৌকায় বেড়াচ্ছেন, ঢাকার রাস্তায় হাঁটছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা দেওয়ার জন্য হায়দ্রাবাদ হাউসে অপেক্ষা করেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন-এগুলো আমাদের গর্বের জায়গা।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা পেরিয়ে সমগ্র বাংলাদেশ উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য আমরা গর্বিত। বিশ্বের বড় বড় অপারেটররা বাংলাদেশে চট্টগ্রাম বন্দরের কাজ করতে চায়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে যখন এগিয়ে যাচ্ছে। মাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দর, বঙ্গবন্ধু টানেল, পদ্মা সেতু, ঢাকায় তৃতীয় বিমানবন্দর টার্মিনাল, পায়রা পোর্ট, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যখন নির্মিত হচ্ছে তখন স্বার্থান্বেষীরা দেশকে পিছিয়ে দেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তারা মানবাধিকারের কথা বলে উন্নয়নকে টেনে ধরতে চায়। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ফিলিস্তিনে পাখির মত মানুষ মারছে সেখানে মানবাধিকারের কথা বলার লোক নাই। দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। চট্টগ্রাম পোর্ট সিটি। চট্টগ্রাম বন্দর সমগ্র দেশে অর্থনীতিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। আগামীতে আরো বেশি ভূমিকা রাখবে।

পরে প্রতিমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ মেজবানে অংশ নেন। বন্দর কর্মকর্তা-কর্মচারী, শ্রমিক, স্টেকহোল্ডার সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ ও সদস্যদের জন্য মেজবানের আয়োজন করা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here