গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ প্রতিরোধে আরও কঠোর হচ্ছে ইইউ

শিপিং খাতে গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এ বিষয়ে তাদের একটি বিল সম্প্রতি ইউরোপীয় পার্লামেন্টের কমিটি অন দ্য এনভায়রনমেন্ট, পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ফুড সেফটির (ইএনভিআই) অনুমোদন পেয়েছে।

পার্লামেন্টারি কমিটি বিলের খসড়া প্রস্তাবনায় উল্লেখযোগ্য কিছু পরিবর্তন এনেছে। বড় কোনো সংশোধন ছাড়া প্রস্তাবনাটি চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে ইউরোপীয় বন্দরমুখী এবং বন্দর ত্যাগকারী সব জাহাজই এর আওতায় আসবে। এছাড়া তখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের কার্বন শুল্ক পরিশোধের ভার জাহাজ ভাড়াকারী কোম্পানির ওপর বর্তাবে।

পার্লামেন্টারি কমিটি যে বিলের অনুমোদন দিয়েছে, তার শর্তগুলো ২০২৪ সাল থেকে ইউরোপের অভ্যন্তরীণ রুটের সব বাণিজ্য এবং আন্তর্জাতিক রুটের ৫০ শতাংশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। আর ২০২৭ সাল থেকে প্রায় শতভাগ শিপিং কার্যক্রমই নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণমূলক বিধিনিষেধের আওতায় আসবে।

বিলটিতে বড় যেসব পরিবর্তন আনা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে একটি হলো- সব ধরনের গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণই নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে থাকবে। এর মধ্যে মিথেন গ্যাসও রয়েছে, যার ফলে এলএনজিচালিত জাহাজগুলোকেও মাত্রাতিরিক্ত নিঃসরণের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। খসড়া প্রস্তাবনায় কেবল কার্বন ডাইঅক্সাইডকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল আর মিথেনকে বাইরে রাখা হয়েছিল। অথচ মিথেন কার্বন ডাইঅক্সাইডের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী গ্রিনহাউজ গ্যাস।

কমিটি কার্বন শুল্কবাবদ প্রাপ্ত তহবিল থেকে ৭৫ শতাংশ অর্থ ওশান ফান্ডে জমা করার প্রস্তাব দিয়েছে। এই ফান্ড সমুদ্র শিল্পে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি রূপান্তরে সহায়ক হবে বলে মনে করছে তারা। এছাড়া যে কার্বন শুল্ক আরোপ করা হবে, তা জাহাজ ভাড়াকারী কোম্পানিকে পরিশোধ করতে হবে- এমন প্রস্তাব করেছে কমিটি। তাদের যুক্তি, জাহাজ পরিচালনা করে ভাড়াকারী কোম্পানিগুলো। তাই জ্বালানি ব্যবস্থাপনার সঙ্গে তারাই সরাসরি সম্পৃক্ত, মালিকপক্ষ নয়। এই প্রস্তাবনার মাধ্যমে পার্লামেন্টারি কমিটি কার্যত জাহাজমালিকদের দীর্ঘদিনের একটি দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করল।

পরিবেশ আন্দোলনকর্মী ও ইউরোপী জাহাজমালিকদের সংগঠন এই খসড়া বিলটিকে স্বাগত জানিয়েছে। বিলটি এখনও প্রস্তাবনার পর্যায়ে রয়েছে। ইউরোপীয় কাউন্সিল, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ও ইউরোপীয় কমিশন এটি নিয়ে আরও পর্যালোচনা করবে। আগামী জুনে বিলটির বিষয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ভোট গ্রহণের কথা রয়েছে। প্রায় একই সময়ে লন্ডনের বৈঠকে আইএমওর মেরিন এনভায়রনমেন্ট প্রটেকশন কমিটিও (এমইপিসি) গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণের বিষয়ে তাদের কৌশল কী হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here