সমুদ্রপথে রাশিয়ার জ্বালানি আমদানি বন্ধের নীতিগত সিদ্ধান্ত ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের

রাশিয়া থেকে সমুদ্রপথে জ্বালানি তেল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে ইউরোপিয়ান কাউন্সিল। তবে পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি সরবরাহের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত এখনও নেয়নি তারা। মূলত হাঙ্গেরির মতো রাশিয়ার জ্বালানি-নির্ভর দেশগুলোর কথা চিন্তা করেই এই পথ খোলা রাখা হয়েছে।

এক বিবৃতিতে ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল বলেছেন, ‘এই নিষেধাজ্ঞার ফলে তাক্ষণিকভাবে রাশিয়া থেকে ৭৫ শতাংশ জ্বালানি আমদানি বন্ধ হয়ে যাবে। আর বছরের শেষ নাগাদ এই হার ৯০ শতাংশে উন্নীত হবে।’

জ্বালানি নিষেধাজ্ঞা ছাড়াও রাশিয়ার সর্ববৃহ ব্যাংক এসবারব্যাংককে সুইফট ফাইন্যান্সিয়াল মেসেজিং সিস্টেমে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে একমত হয়েছে ইউরোপিয়ান কাউন্সিল। এছাড়া রাশিয়ার কোনো জাহাজ এখন থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বীমা খাত থেকে কোনো সুবিধা পাবে না।

কাউন্সিলের বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, বাজেট চাহিদা পূরণের জন্য ইউক্রেনকে জরুরি ভিত্তিতে প্রায় ১ হাজার কোটি ডলার সরাসরি আর্থিক সহায়তা দেবে ইইউ। ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের এসব সিদ্ধান্ত অবশ্য এখনও চূড়ান্ত নয়। এগুলো বাস্তবায়নের আগে আরও কিছু আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হবে তাদের।

ইউরোপ যদি রাশিয়া থেকে সমুদ্রপথে জ্বালানি আমদানি বন্ধ করে দেয়, তাহলে তাদের যেমন বিকল্প উৎসের সন্ধান করতে হবে, তেমনই রাশিয়ার জ্বালানি আয়ের ওপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। রাশিয়ার জ্বালানির সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার ইউরোপ। দেশটি মোট যে পরিমাণ পেট্রোলিয়াম বিদেশের বাজারে বিক্রি করে, তার প্রায় অর্ধেকই যায় ইউরোপে।

ইইউর নিষেধাজ্ঞার ফলে রাশিয়াকে তাদের জ্বালানি রপ্তানি করতে হবে এশিয়ার বাজারে। সেক্ষেত্রে পরিবহন খরচ কিছুটা বেড়ে যাবে। আর এই ব্যয় বৃদ্ধির প্রভাব প্রশমনের জন্য তাদের এশিয়ার ক্রেতাদের কাছে কম দামে জ্বালানি বিক্রি করতে হবে।

রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে রুশ সরকার জ্বালানি তেল ও গ্যাস রপ্তানির ওপর অনেকখানি নির্ভরশীল। গত কয়েক মাসে পশ্চিমা দেশগুলো যেভাবে বিভিন্ন খাতে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে, তাতে দেশটির জ্বালানি রপ্তানিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ার ধারণা করা হচ্ছিল। তবে বছরের প্রথম চার মাসে তেল ও গ্যাস খাতে রাশিয়ার রাজস্ব বছরওয়ারি প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। জ্বালানির দরবৃদ্ধি তাদের এই আয় বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে সহায়ক হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here