বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগে নতুন গতি আনবে ‘সেপা’

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট বা ‘সেপা’ চুক্তি হলে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে নতুন গতি আসবে। পণ্য ও সেবা বাণিজ্য বাড়বে কয়েকগুণ। সম্প্রতি সম্ভাব্য এ চুক্তির বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা শেষ করেছে দুই দেশ। যৌথ এ সমীক্ষায় এ সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, চুক্তি হলে দুই দেশের মধ্যে আগামী ৭ থেকে ১০ বছরে কমপক্ষে ৭০০ কোটি ডলার থেকে সর্বোচ্চ এক হাজার ৫০০ কোটি ডলার বাণিজ্য বাড়বে। সেবা খাতেও সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্নিষ্টরা। বিশেষ করে পরিবহন, বীমা, ব্যাংকিং, টেলিকমিউনিকেশন ও বিতরণ সেবায় সম্ভাবনা রয়েছে। পণ্য ও সেবা বাণিজ্য বাড়ার কারণে দুই দেশে বিনিয়োগ চাহিদা সৃষ্টি হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সূত্রে এসব তথ্য দিয়েছে দৈনিক সমকাল।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের সভায় ভারতের পক্ষ থেকে দুই দেশের বাণিজ্য সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে এ ধরনের চুুক্তির প্রস্তাব আসে। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে ঢাকায় দুই দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ের সভায় চুক্তি করতে সম্মত হয় দুই দেশ। পরে দুই দেশের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের এক সভায় চুক্তির বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশের ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউট এবং ভারতের সেন্টার ফর রিজিওনাল ট্রেড যৌথ সমীক্ষাটি করেছে।

বাংলাদেশের সম্ভাবনা: সেপা করার ৭ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ভারতের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি ৩০০ কোটি থেকে ৫০০ কোটি ডলার পর্যন্ত বাড়বে। বাংলাদেশের বস্ত্র ও পোশাক, ওষুধ, প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ চর্বি, রাসায়নিক, সামুদ্রিক পণ্য, বেকারিসহ বিভিন্ন পণ্য ভারতের বাজারে সম্ভাবনাময়। এ ছাড়া বাংলাদেশ পেশাজীবী সেবা, আইটি, নির্মাণ, আর্থিক সেবা, যোগাযোগ সেবাসহ বিভিন্ন সেবা খাতে ভারতের বাজারে কাজ করার সুযোগ পাবে।

ভারতের সম্ভাবনা: চুক্তি করা হলে ৭ থেকে ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে ভারতের পণ্য রপ্তানি বর্তমান রপ্তানির সঙ্গে আরও ৪০০ কোটি থেকে এক হাজার কোটি ডলার পর্যন্ত বাড়বে। ভারত থেকে বাংলাদেশের বাজারে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য, ওষুধ, প্লাস্টিক ও প্লাস্টিক পণ্য, কাঠের পণ্য, তুলা, ওভেন ফেব্রিকস, লোহা, ট্রাম, রেলের বগিসহ বিভিন্ন পণ্য বাংলাদেশের বাজারে সম্ভাবনাময়।

বাড়বে বিনিয়োগ: প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যে পণ্য ও সেবা বাণিজ্য বাড়লে তাকে কেন্দ্র করে বিনিয়োগ চাহিদা সৃষ্টি হবে। ভারতের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে খাদ্য, ফার্মাসিউটিক্যালস, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, বস্ত্র ও তৈরি পোশাক, কৃষিভিত্তিক শিল্প, ফার্ম মেশিনারি প্লান্ট, অটোমোবাইলস, হালকা প্রকৌশল খাত, ইলেকট্রনিক্স, সিরামিক, আইসিটি খাত, ব্যাংকিং ও অন্যান্য আর্থিক খাত, টেলিকমিউনিকেশনস এবং মেগা প্রকল্পে বিনিয়োগের সুযোগ হবে। আর বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা খাদ্য ও কোমলপানীয়, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, ফার্মাসিউটিক্যালস, প্লাস্টিক ও রাবার পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, বস্ত্র ও তৈরি পোশাক, পাট ও পাটজাত পণ্য, সিমেন্ট, স্পিনিং মিলস, ইলেকট্রনিক্স, ব্যাটারি, ভ্রমণ ও পর্যটন এবং তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের সুযোগ পাবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here