`জাতিসংঘের দশ বছর মেয়াদি মহাসমুদ্র পরিকল্পনায় হাইড্রোগ্রাফির অবদান’ এই প্রতিপাদ্যে এ বছর বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে মঙ্গলবার (২১ জুন) বাংলাদেশ নৌবাহিনীর চিফ হাইড্রোগ্রাফারের ব্যবস্থাপনায় চট্টগ্রামে নৌঘাঁটি ঈসা খান এরিয়া মাল্টিপারপাস হলে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম নৌঅঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, ন্যাশনাল হাইড্রোগ্রাফিক কমিটির সদস্যবৃন্দ, হাইড্রোগ্রাফিক ও মেরিটাইম সংস্থার প্রতিনিধিগণ, বিভিন্ন সমুদ্র বন্দর, বিশ্ববিদ্যালয়, মেরিটাইম রিসার্চ ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনা, সমুদ্র বিজ্ঞানে স্যাটেলাইট প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং জাতিসংঘ ঘোষিত সমুদ্র দশকের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সমুদ্র বিষয়ক জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তার ওপর আলোচনা হয়। এ ছাড়া সেমিনারে হাইড্রোগ্রাফি সেবাকে কাজে লাগিয়ে জাতীয় হাইড্রোগ্রাফিক সংস্থাসমূহের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন নৌবাহিনীর চিফ হাইড্রোগ্রাফার কমডোর এ কে এম সিরাফুল্লাহ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর হাইড্রোগ্রাফি পরিদপ্তরের পরিচালক ক্যাপ্টেন এম মিনারুল হক।
বাংলাদেশ ২০০১ সালের ২ জুলাই আন্তর্জাতিক হাইড্রোগ্রাফিক সংস্থার ৭০তম সদস্য দেশ হিসেবে হাইড্রোগ্রাফি সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা, সমুদ্র দূষণের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষায় হাইড্রোগ্রাফিক তথ্য-উপাত্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ নৌবাহিনী দেশের সমুদ্র অঞ্চলের সব হাইড্রোগ্রাফিক কর্মকাণ্ডের ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে কাজ করছে।
ইতিমধ্যে নৌবাহিনী আন্তর্জাতিক হাইড্রোগ্রাফিক সংস্থার মান অনুযায়ী পেপার ও ইলেক্ট্রনিক নটিক্যাল চার্ট তৈরিতে সক্ষমতা অর্জন করেছে। সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের মাধ্যমে নৌবাহিনী দেশের অধিকৃত সমুদ্র অঞ্চলের পেপার চার্ট ও নটিক্যাল চার্ট প্রকাশ করছে, যা সমুদ্রপথে নিরাপদ নৌ চলাচলে ব্যবহার হচ্ছে। পাশাপাশি চার্টসমূহ নিয়মিত হালনাগাদ করা হচ্ছে; যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হচ্ছে।
এ ছাড়া ঢাকায় বিআইডব্লিউটিএ কার্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি মিলনায়তনে দিবসটি উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক, সদস্য (অর্থ) ও অতিরিক্ত সচিব আবদুছ ছাত্তার শেখ, সদস্য (পরিকল্পনা ও পরিচালন) ও যুগ্ম সচিব মো. দেলোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সদস্য (প্রকৌশল) ও যুগ্ম সচিব ড. একেএম মতিউর রহমান।
এ উপলক্ষে বিআইডব্লিউটিএ ভবনে সার্ভে ইকুইপমেন্টের প্রদর্শনী করা হয়। অনুষ্ঠানে হাইড্রোগ্রাফিক কার্যক্রম নিয়ে ডকুমেন্টারি প্রচারিত হয়।