নরওয়ের অফশোর তেল-গ্যাস উত্তোলন বৃদ্ধিকে সমর্থন ইইউর

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এতদিন উত্তোলকের পরিবর্তে প্রাকৃতিক গ্যাসের ক্রেতা হিসেবে থেকে যাওয়াকেই শ্রেয় মনে করেছে। তবে সেই জোটটিই এখন গভীর সাগরে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের ওপর জোর দিচ্ছে। আর এই পরিবর্তনের কারণ হলো ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান। ইউরোপিয়ান কমিশন (ইসি) সম্প্রতি জানিয়েছে, নরওয়ের অফশোর তেল ও গ্যাস উত্তোলন বাড়ানোর নীতির প্রতি পূর্ণ সমর্থন রয়েছে তাদের।

ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে ইউরোপীয় দেশগুলোর। এর জেরে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক ও আর্থিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে শুরু করে ইইউ। এরই ধারাবাহিকতায় দেশটি থেকে সমুদ্রপথে জ্বালানি আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জোটটি। কিন্তু কেবল আমদানি বন্ধ করলেই তো আর চলবে না। রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল ইউরোপ। এ কারণে বিকল্প আমদানি উৎস সন্ধানের পাশাপাশি নিজস্ব উৎপাদন বাড়ানোর ওপরও জোর দিতে বাধ্য হয়েছে ইইউ।

বিভিন্ন পাবলিক পলিসির কারণে বছরের পর বছর ধরে সদস্য দেশগুলোকে তেল-গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধির বিষয়ে নিরুৎসাহিত করে আসছে ইইউ। প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপের চেয়ে কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নেই বেশি আগ্রহী জোটটি। এই নীতির কারণেই ২০৫০ সাল নাগাদ নিজেদের তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন কার্যক্রম থেকে পুরোপুরি সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ডেনমার্ক। অথচ ইইউর এই সদস্য রাষ্ট্রেরই রয়েছে ইউরোপের বৃহত্তম গভীর সমুদ্র তেল ও গ্যাস খাত।

তবে পরিস্থিতি এখন পাল্টেছে। চলতি বছরের শুরু থেকেই গ্যাস উত্তোলন বাড়িয়েছে নরওয়ে। নিজেদের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দেশটি চলতি বছর জুড়ে মোট ১০০ টিডব্লিউএইচ অতিরিক্ত গ্যাস ইইউর বাকি দেশগুলোকে সরবরাহ করতে সক্ষম, যা রাশিয়া থেকে জোটটির বার্ষিক আমদানির প্রায় ৬ শতাংশ।

এই বাড়তি উৎপাদন যেন সংকটকালীন ঘাটতি মেটাতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে, সেই লক্ষ্যে সম্প্রতি পারস্পারিক জ্বালানি সম্পর্ক আরও দৃঢ় করা ও দীর্ঘমেয়াদে গভীর সমুদ্রে তেল-গ্যাস কার্যক্রম জোরালো করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে ইসি ও নরওয়ে সরকার। এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘নরওয়ে তেল ও গ্যাসের বড় উৎস। অব্যাহত অনুসন্ধান, নতুন আবিষ্কার এবং তেল ও গ্যাসক্ষেত্রগুলোর উন্নয়নের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে ইউরোপের শীর্ষ সরবরাহকারী হয়ে ওঠার পূর্ণ সম্ভাবনা রয়েছে দেশটির। নরওয়ের এই উত্তোলন ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি ইউরোপীয় বাজারের জন্য সহায়ক হবে। এ কারণে ইইউ দেশটির কার্যক্রমে সমর্থন জানাচ্ছে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here