নর্ড স্ট্রিম দুর্ঘটনায় রেকর্ড পরিমাণ মিথেন নির্গত হয়েছে: জাতিসংঘ

বাল্টিক সাগরে গ্যাস নির্গমন মনিটরিং করছে ডেনমার্কের একটি জাহাজ। কৃতজ্ঞতা: ডেনিশ ডিফেন্স কমান্ড

বাল্টিক সাগরের তলদেশে নর্ড স্ট্রিম গ্যাস পাইপলাইনের ফাটল দিয়ে এখন পর্যন্ত একক কোনো ঘটনায় রেকর্ড পরিমাণ ক্ষতিকর মিথেন নির্গমন হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ জলবায়ু কর্মসূচি (ইউএনইপি)। সংস্থাটির ইন্টারন্যাশনাল মিথেন এমিশনস অবজারভেটরির (আইএমইও) গবেষকরা স্যাটেলাইট চিত্রের বিশ্লেষণ করে ভারী মাত্রায় মিথেন গ্যাস নির্গমন শনাক্ত করেছেন।

মিথেন কার্বন ডাইঅক্সাইডের চেয়েও শক্তিশালী একটি গ্রিনহাউজ গ্যাস। তবে এটির টিকে থাকার সক্ষমতা কার্বন ডাইঅক্সাইডের চেয়ে কম।

এক বিবৃতিতে আইএমইওর প্রধান ম্যানফ্রেডি ক্যালটাগিরন বলেন, এটি সত্যিই খারাপ ঘটনা। এটি সম্ভবত আমাদের শনাক্ত করা সবচেয়ে বড় মিথেন নির্গমনের ঘটনা। আর এটি এমন এক সময়ে ঘটল, যখন আমরা নিঃসরণ কমানোর চেষ্টা করছি। এই ঘটনা আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কোনোভাবেই সাহায্য করবে না।

স্যাটেলাইটের তথ্য বিশ্লেষণ করে মিথেন নিঃসরণ মনিটরিং করে গবেষণা প্রতিষ্ঠান জিএইচজিস্যাট। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, নর্ড স্ট্রিমের দুটি লাইনের চারটি ফাটলের মধ্যে একটি থেকে মিথেন নির্গমনের হার ঘণ্টায় ২২ হাজার ৯২০ কেজি, যা ঘণ্টায় প্রায় ৬ লাখ ৩০ হাজার পাউন্ড কয়লা পোড়ানোর সমান। ফাটল তৈরির চারদিন পর মিথেন নির্গমনের এই হার আশঙ্কাজনকভাবে বেশি বলে উল্লেখ করেছেন জিএইচজিস্যাটের গবেষকরা।

অবশ্য টুইটারে এক বার্তায় আইএমইও আজ জানিয়েছে, সর্বশেষ পাওয়া তথ্য মিথেন নির্গমনের গতি কমে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

রুশ রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমের পাইপলাইন দুটি থেকে মিথেন নির্গমনের মোট পরিমাণ সাম্প্রতিক সময়ে মেক্সিকো উপসাগরের দুর্ঘটনা থেকেও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মেক্সিকান জলসীমার অফশোর তেল ও গ্যাসক্ষেত্র থেকে গত ডিসেম্বরে একে দুর্ঘটনায় ঘণ্টায় প্রায় ১০০ টন মিথেন ছড়িয়ে পড়ে।

একটি জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, সেই ঘটনায় ১৭ দিনে মোট প্রায় ৪০ হাজার টন মিথেন নির্গত হয়েছিল, যা ইউএস এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সির গ্রিনহাউজ গ্যাস ইকুয়ালেন্সি ক্যালকুলেটর অনুযায়ী ১১০ কোটি পাউন্ড কয়লা পোড়ানোর সমান।

নর্ড স্ট্রিম হলো দুটি অফশোর গ্যাস পাইপলাইন, যার মাধ্যমে বাল্টিক সাগরের তলদেশ দিয়ে রাশিয়া থেকে জার্মানিতে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করা হয়। গত ২৬ সেপ্টেম্বর দুটি পাইপলাইনেই কয়েক দফা বিস্ফোরণ সংঘটিত হয় এবং ফাটল দিয়ে গ্যাস বেরিয়ে যেতে শুরু করে। এই দুর্ঘটনার পেছনে পরিকল্পিত কোনো নাশকতা সম্পৃক্ত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here