পানির নিচের শব্দদূষণ কমাতে নতুন সংশোধিত নীতিমালা আনছে আইএমও

বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলের সময় পানির নিচে যে শব্দদূষণ হয়, তাতে সামুদ্রিক প্রাণবৈচিত্র্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এই দূষণ নিয়ন্ত্রণে নতুন একটি নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে জাতিসংঘের সমুদ্রবিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও), প্রকৃতপক্ষে যেটি এ-সংক্রান্ত আগের একটি নীতিমালার সংশোধনী হতে যাচ্ছে। সম্প্রতি জাহাজের নকশা ও নির্মাণ বিষয়ক আইএমওর উপকমিটির এক বৈঠকে এই সংশোধিত নীতিমালার খসড়া অনুমোদিত হয়েছে।

গত ২৩-২৭ জানুয়ারি উপকমিটির এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। খসড়ায় বলা হয়েছে, বাণিজ্যিক জাহাজগুলো আন্ডারওয়াটার রেডিয়েটেড নয়েজের (ইউআরএন) অন্যতম প্রধান উৎস। সাগরের স্তন্যপায়ী প্রাণী, অমেরুদণ্ডী প্রাণী, মাছসহ অন্যান্য প্রাণবৈচিত্র্যের জীবনচক্র বেশ সংবেদনশীল প্রক্রিয়া। পানির নিচের শব্দদূষণ সেই প্রক্রিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এর ফলে এসব সামুদ্রিক প্রাণসম্পদ আহরণের কাজে নিয়োজিত উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান ও আয় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আইএমও।

ইউআরএন কমানোর জন্য জাহাজের নকশাকারী, নির্মাতা ও অপারেটরদের কোন কোন বিষয়ের দিকে নজর রাখতে হবে, খসড়া নীতিমালায় সে বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। পানির নিচের শব্দদূষণ কমানোর প্রচেষ্টায় নিজেদের অবস্থান থেকে অবদান রাখার লক্ষ্যে তারা যেন সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সহায়তা করে, সেই উৎসাহ দেওয়া হয়েছে আইএমওর নতুন এই নীতিমালায়।

এর আগে ২০১৪ সালে একই ধরনের একটি নীতিমালা চালু করেছিল আইএমও। সেটিতেই কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে নতুন এই খসড়ায়। এই সংশোধনী আনা হয়েছে দূষণ পরিমাপের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড, করণীয়, ক্লাসিফিকেশন সোসাইটি রুলসের মতো টেকনিক্যাল বিষয়গুলোয়।

সাবকমিটির বৈঠকে খসড়াটি অনুমোদিত হলেও এটি চ‚ড়ান্ত নীতিমালা হিসেবে কার্যকরের আগে আরও একটি ধাপ পেরোতে হবে। আগামী ৩-৭ জুলাই আইএমওর মেরিন এনভায়রনমেন্ট প্রটেকশন কমিটির (এমইপিসি) ৮০তম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে খসড়াটি উত্থাপন করা হবে। এমইপিসি অনুমোদন দিলে তারপর সেটি নীতিমালা হিসেবে কার্যকর হবে।

এদিকে আইএমওর ডিপার্টমেন্ট অব পার্টনারশিপস অ্যান্ড প্রজেক্টস (ডিপিপি) চলতি বছরের শেষের দিকে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটির (জিইএফ) সঙ্গে যৌথভাবে একটি প্রকল্প চালুর পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। দুই বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফর মিটিগেশন অব আন্ডারওয়াটার নয়েজ ফ্রম শিপিং (গ্লোনয়েজ পার্টনারশিপ)। আইএমওর নতুন নীতিমালার পাশাপাশি এই প্রকল্প পানির নিচের শব্দদূষণ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here