গ্রিন করিডোরে যুক্ত হচ্ছে সিঙ্গাপুর, লস অ্যাঞ্জেলেস ও লং বিচ বন্দর

বৈশ্বিক নিঃসরণ কমানোর প্রচেষ্টায় নিজেদের অবস্থান থেকে অবদান রাখার প্রচেষ্টা রয়েছে সমুদ্র পরিবহন খাতের। জাতিসংঘের সমুদ্রবিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনেরও (আইএমও) এ বিষয়ে কিছু উদ্যোগ রয়েছে। তবে এসবের বাইরে বন্দর কর্তৃপক্ষগুলো পরিবেশবান্ধব শিপিং রুট প্রতিষ্ঠায় স্বেচ্ছায় উদ্যোগ নিচ্ছে, যার অন্যতম হলো গ্রিন করিডোর প্রতিষ্ঠা। এরই মধ্যে কয়েকটি বন্দরের মধ্যে গ্রিন করিডোর প্রতিষ্ঠায় চুক্তি হয়েছে। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো সিঙ্গাপুর, লস অ্যাঞ্জেলেস ও লং বিচ বন্দর।

গ্রিন করিডোর প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বন্দর কর্তৃপক্ষগুলোর মধ্যে এ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। সম্প্রতি সমুদ্র শিল্পবিষয়ক বার্ষিক আয়োজন সিঙ্গাপুর মেরিটাইম উইক চলাকালে এ ঘোষণা আসে সিঙ্গাপুর মেরিটাইম অথরিটির (এমপিএ) পক্ষ থেকে। সমঝোতা স্মারকে বন্দর তিনটি ছাড়াও যুক্ত হয়েছে সিফোরটি সিটিজ ক্লাইমেট লিডারশিপ গ্রুপ। এটি হলো বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ৯৬টি শহরকে নিয়ে গড়ে ওঠা একটি গ্রুপ, যেসব শহরের বৈশ্বিক জনসংখ্যার ৮ শতাংশের বেশি এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ হিস্যা রয়েছে।

গ্রিন করিডোর প্রতিষ্ঠার ধারণা প্রথম উত্থাপিত হয় ২০২১ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক সম্মেলন কপ২৬-তে। সম্মেলনে ক্লাইডব্যাংক ডিক্লারেশনে স্বাক্ষর করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, জাপানসহ ২২টি দেশ। এই ঘোষণার মূল লক্ষ্য হলো সমুদ্র পরিবহন খাতে কয়েকটি গ্রিন করিডোর প্রতিষ্ঠা। ২০২৫ সাল নাগাদ অন্তত ছয়টি গ্রিন করিডোর প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে ক্লাইডব্যাংক ডিক্লারেশনে। ২০৩০ সাল নাগাদ আরও কয়েকটি নিঃসরণমুক্ত রুট কার্যকর হবে বলে কপ২৬ সম্মেলনে আশা প্রকাশ করা হয়।

গ্রিন করিডোর কোনো আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা নয়। এটি পুরোপুরি ঐচ্ছিক সিদ্ধান্ত। তবে একটি-দুটি করে যখন বিশ্বের সব ট্রেডিং রুটই যখন গ্রিন করিডোর হয়ে যাবে, তখন সেটি নিঃসরণ কমানোর বৈশ্বিক উদ্যোগের অংশ হয়ে যাবে। এগুলো হলো এমন শিপিং রুট, যেখানে কোনো নিঃসরণ থাকবে না। এসব রুটে চলাচলকারী জাহাজগুলো ব্যবহার করবে সবুজ জ্বালানি। দুই বা ততোধিক বন্দরের মধ্যে পারস্পারিক সমঝোতার ভিত্তিতে এসব করিডোর গড়ে উঠবে।

এর আগে গত বছর গ্রিন করিডোর প্রতিষ্ঠার বিষয়ে নেদারল্যান্ডসের রটারডাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি চুক্তি করে সিঙ্গাপুর বন্দর, যেখানে বিকল্প জ্বালানিনির্ভর শিপিং রুট প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে সামুদ্রিক নিরাপত্তা, কার্যক্ষমতা ও পণ্য পরিবহনে স্বচ্ছতা বাড়ানোর কাজে পারস্পারিক সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here