স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির কারণে বার্জ থেকে অভিবাসন প্রত্যাশীদের সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাজ্য

গত সপ্তাহের শুরুতে অ্যাকোমোডেশনাল বার্জ বাইবি স্টকহোমে ৩৯ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর থাকার ব্যবস্থা করে যুক্তরাজ্য সরকার। তবে সপ্তাহ না পেরুতেই স্বম্ভাব্য স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির কারণে ‘আপাত সতর্ককতামূলক ব্যবস্থা’ হিসেবে বার্জ থেকে সকল অভিবাসনপ্রত্যাশীকে সরিয়ে নিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শুক্রবার গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সমস্যার গভীরতা ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে বর্তমানে বিস্তারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হচ্ছে।

প্রতি বছর হাজার হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে সমুদ্র পথে পাড়ি জমায়। আটক ব্যক্তিদের অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করার লক্ষ্যে হোটেল ভাড়া করতে গিয়ে মোটা অংকের অর্থ গুণতে হয় যুক্তরাজ্য সরকারকে। অন্যদিকে এসব হোটেলে থাকার সুব্যবস্থার কারণে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমাতে আরও বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

এমন পরিস্থিতিতে মূলত হোটেল ভাড়াবাবদ খরচ কমানো এবং অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্যে অ্যাকোমোডেশন ভেসেল বাইবি স্টকহোম ভাড়া করে ব্রিটিশ সরকার।

ইংল্যান্ডের ডরসেটের পোর্টল্যান্ড বন্দরে নোঙর করা বাইবি স্টকহোমে গত সপ্তাহের শুরুতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আবাসনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। তবে প্রক্রিয়া শুরুর প্রাক্কালেই সেখানকার পানিতে লিজিওনেলা ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, লিজিওনেলা ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করার বিষয়টি তখনই সরকারকে অবহিত করা হয়। লিজিওনেলা সংক্রামিত পানি বাতাসে মিশে নিঃশ্বাসের সাথে মানবদেহে প্রবেশ করলে তা ফুসফুসের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক হয়ে ওঠে।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাইবি স্টকহোমে থাকা বেশকিছু অভিবাসনপ্রত্যাশী গলা ব্যথা ও কাশির সমস্যায় ভুগছেন। যদিও যুক্তরাজ্য সরকারের দাবি, ৩৯ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর প্রত্যেকেই বর্তমানে সুস্থ আছেন। সতর্কতামূলকভাবেই আগেভাগে তাদেরকে বার্জ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জাহাজে থাকা মেডিক্যাল টিম পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পরই তাদেরকে হোটেলে নিয়ে যাওয়া হবে।

উল্লেখ্য, এপ্রিলের শুরুতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অস্থায়ীভিত্তিতে থাকার জন্য অ্যাকোমোডেশন ভেসেলটি ভাড়া করে যুক্তরাজ্য সরকার। ভেসেলটি অন্তত ১৮ মাসের জন্য ভাড়া করা হয়েছে। ১৯৭৬ সালে নির্মিত অ্যাকোমোডেশন ভেসেলটি সংস্কার করে এতে বর্তমানে ৫০০টি বেড যুক্ত করা হয়েছে।

যুক্তরাজ্য সরকার জানায়, পরিবার পরিজন ছাড়া যেসব পুরুষ অভিবাসনের আশায় একাকী যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমায়, মূলত তেমন ২০০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীতে এখানে থাকতে দেওয়া হবে।

বিরোধী দল ও সমালোচকরা শুরু থেকেই সরকারের এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে আসছেন। তাদের মতে, একটি বার্জে এত ব্যক্তির আবাসনের ব্যবস্থা করায় তাদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা ব্যবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিরোধী দলের কড়া সমালোচনা স্বত্ত্বেও সরকার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু করে।

বিরোধী দলীয় মন্ত্রী লিজিওনেলা ব্যাকরেটিয়ার উপস্থিতি এবং বার্জ থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে বিপর্যয়ের সঙ্গে তুলনা করেন। তবে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে দ্রæত প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আশাবাদ ব্যক্ত করেছে সরকার।

Facebook Notice for EU! You need to login to view and post FB Comments!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here