ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ ভেস্তে যাওয়ার পর রাশিয়ার গোলাবর্ষণের ঝুঁকির মধ্যে প্রথমবারের মতো ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগরীয় বন্দর ছেড়ে যাওয়া জাহাজ জোসেফ শুলতে নিরাপদে তুরস্ক পৌঁছেছে। এদিকে তুর্কী সরকার জানিয়েছে, তারা ক্রেমলিনকে এমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে সতর্ক করেছে, যার কারণে উত্তেজনা আরও বেড়ে যেতে পারে।
চীনা মালিকানাধীন হংকংয়ের পতাকাবাহী কনটেইনার জাহাজটি ১৬ আগস্ট ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগরীয় বন্দর ওডেসা ছাড়ে। কিয়েভ ঘোষিত ‘মানবিক করিডোর’ ব্যবহার করে জাহাজটি পরের দিন নিরাপদে তুরস্ক পৌঁছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকেই ওডেসা বন্দরে আটকে ছিল।
ইউক্রেন জানিয়েছে, তাদের বন্দরগুলোয় আটকে থাকা জাহাজগুলোর জন্যই প্রধানত এই করিডোর চালু করা হয়েছে। দেশটির দাবি, এই করিডোর যেন কোনো সামরিক কাজে ব্যবহৃত না হয়, সেই স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে তারা। এর আগে ইউক্রেন জানিয়েছিল, তারা করিডোরটির পরিকল্পনা এরই মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) কাছে জমা দিয়েছে।
গত মাসে নিরাপদে খাদ্যশস্য পরিবহনের চুক্তি ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয় রাশিয়া। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী রাশিয়াকে খাদ্য ও সার রপ্তানিতে সুযোগ-সুবিধা ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছে না-এমন অভিযোগ থেকেই চুক্তির মেয়াদ আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় তারা। এর আগে গত ১৮ মে চুক্তির মেয়াদ দুই মাসের জন্য বাড়াতে সম্মত হয় রাশিয়া।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর কৃষ্ণ সাগরীয় বন্দরগুলো অবরোধ করে রাখে রুশ সেনারা। এতে সমুদ্রপথে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলশ্রুতিতে বৈশ্বিকভাবে খাদ্য সংকট ও মূল্যস্ফীতি দেখা দেয়। এ সংকট দূর করতে গত বছরের ২২ জুলাই জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ চুক্তি স্বাক্ষর হয় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। চুক্তিটির ফলে যুদ্ধকালীন দামামার মধ্যে কৃষ্ণ সাগর দিয়ে খাদ্যশস্য পরিবহনের নিরাপদ করিডোর তৈরি হয়েছিল।
কিন্তু রাশিয়া সরে আসার পর থেকেই ইউক্রেনের বন্দরগুলো আবার অনিরাপদ হয়ে ওঠে। ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে কৃষ্ণ সাগরীয় বন্দরগুলোর পরিবর্তে রোমানিয়া হয়ে খাদ্যশস্য রপ্তানির লক্ষ্যে দানিউব নদীর তীরে অবস্থিত অভ্যন্তরীণ বন্দরগুলো ব্যবহার করতে শুরু করেছিল ইউক্রেন। কিন্তু রাশিয়া হামলা চালায় সেখানেও। চলতি মাসেই দানিউব তীরবর্তী ইজমাইল বন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রুশ সেনারা।