ঘূর্ণিঝড় ও প্রলয়ংকরী বন্যায় মৃত্যুপুরী লিবিয়ার বন্দরনগরী দারনা

প্রধান চার বন্দর পুনরায় চালু

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) লিবিয়ার উত্তর উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্নিঝড় ড্যানিয়েল। ঘূর্নিঝড়ের আঘাতে দুইটি বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় দেখা দেয় প্রলয়ংকরী বন্যা। প্রায় বিশ ফুট উঁচু ঢেউয়ের তোড়ে বহুতল ভবন, গাছপালা ও হাজার হাজার মানুষ সমুদ্রে ভেসে যায়।

আকস্মিক এই বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এক লাখ বাসিন্দার বন্দরনগরী দারনা। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত দারনা শহরে প্রায় ৫ হাজার ৩০০ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তবে মৃত্যের সংখ্যা ১৮ থেকে ২০ হাজার হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দারনার মেয়র আবদুলমেনাম আল-গাইথি।

লিবিয়ার সাম্প্রতিক ইতিহাসের ভয়াবহতম প্রাকৃতিক দুর্ঘটনার পর সমুদ্র থেকে শত শত লাশ ভেসে আসছে। বিপুল সংখ্যক লাশের পরিচয় শণাক্ত করে অ্যন্তোষ্টিক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। লাশের জন্য দাফনের কাপড় এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে লাশবাহী ব্যাগও যোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে না। মৃতদের অনেককে গণকবরে সমাহিত করা হচ্ছে। যেসব লাশের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি কর্তৃপক্ষ তাদের ছবি সংগ্রহ করে রাখছে।

স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জাতিসংঘ অভিবাসন সংস্থা (আইএমও) জানায়, এখনো অন্তত দশ হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন এবং প্রায় ত্রিশ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভবনগুলোতে জীবিত মানুষের অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। তবে গোটা শহরটা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়ায় এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা বিকল হয়ে পড়ায় উদ্ধার তৎপরতা চালাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।

অন্যদিকে ঘূর্নিঝড় কারণে শনিবার সতর্কতামূলকভাবে লিবিয়ার তেল পরিবহনকারী প্রধান চারটি বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্দর প্রতিনিধি আল ওমরান জানান, মঙ্গলবার পূর্বাঞ্চলীয় ব্রেগা, এস সিদ্রা ও রাস লানুফ বন্দর এবং বুধবার (আজ) জুইতিনা বন্দর পুনরায় চালু করা হয়েছে।

ওপেকের তেল উৎপাদনের ঘাটতি এবং ঘূর্নিঝড়ে লিবিয়ার বন্দরগুলোর কার্যক্রম দীর্ঘ মেয়াদে বন্ধ থাকার আশঙ্কায় তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। বিগত দশ মাসের মধ্যে বুধবার তেলের দাম সর্ব্বোচ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here