উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়া সম্প্রতি স্মরণকালের ভয়াবহতম ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার সম্মুখীন হয়। প্রলয়ংকরী বন্যায় উপকূলীয় শহর দেরনাসহ লিবিয়ার পূর্বাঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তেল উৎপাদন বাধাপ্রাপ্ত হয়নি বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি ন্যাশনাল অয়েল করপোরেশন (এনওসি)।
এনওসির চেয়ারম্যান ফারহাত বেংদারা জানান, পূর্বাঞ্চলের তেল রপ্তানিকারক বন্দরগুলো ঘূর্নিঝড় ড্যানিয়েলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি এবং ঘূর্ণিঝড়ের পর সেসব বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এনওসির তথ্য মতে, বর্তমানে দৈনিক ১২ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করছে লিবিয়া। লিবিয়ার দুইটি গ্যাসক্ষেত্রের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছে ইতালির বহুজাতিক জ্বালানি কোম্পানি ইএনআই এসপিএ। বন্যার কারণে লিবিয়ায় তাদের কার্যক্রমেও ছেদ পড়েনি বলে জানিয়েছে ইএনআই।
তবে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ৯ সেপ্টেম্বর সতর্কতামূলকভাবে তেল রপ্তানিকারক প্রধান চারটি বন্দর ব্রেগা, এস সিদ্রা, রাস লানুফ ও জুইতিনার কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। ব্লুমবার্গ রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্টের জ্বালানিবিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা আমোস হক্সটিন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের পর তেল রপ্তানিকারক বন্দরগুলোর কার্যক্রম কিছুটা গুটিয়ে আনা হয়। তবে ঝড়ের তাÐব কেটে গেলে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে বন্দরগুলো পুনরায় কার্যক্রম শুরু করে।
ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল লিবিয়ার তেল শিল্পকে আরও একবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এল। তেল মজুদের দিক থেকে লিবিয়া আফ্রিকা মহাদেশে প্রথম ও বিশ্বে নবম অবস্থানে রয়েছে। বিপুল পরিমান তেল মজুদ থাকা সত্ত্বেও অস্ত্রধারী বিভিন্ন গ্রæপের কারণে বহু বছর ধরেই লিবিয়ার তেল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তবে ২০২০ সালের মাঝামাঝি দেশটিতে গৃহযুদ্ধে যুদ্ধবিরতি দেওয়ার পর পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হয়েছে। ২০২৩ সালে দৈনিক গড়ে ১০ লাখ ব্যারেলের বেশি অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করেছে লিবিয়া।