প্রধানমন্ত্রী জাপান সফরে যাচ্ছেন ২৫ এপ্রিল

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

চারদিনের এক আনুষ্ঠানিক সফরে ২৫ এপ্রিল জাপান যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে এ সফরে যাচ্ছেন তিনি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো জাপান সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। গত বছরের নভেম্বরে তার এ সফরে যাওয়ার কথা ছিল। তবে সে সময় দেশটিতে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় তার এ সফর স্থগিত করা হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আনুষ্ঠানিক এ সফর চলাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানাবেন জাপানের সম্রাট নারুহিতো। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে এক দ্বিপক্ষীয় শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর জাপানি প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত এক নৈশভোজে অংশ নেবেন তিনি।

জাপান সফর চলাকালে প্রধানমন্ত্রী বিনিয়োগবিষয়ক এক শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া সেখানে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের পাশাপাশি কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকেও যোগ দেবেন তিনি। জাপানে অবস্থানকালে সেখানকার কয়েকজন নাগরিকের হাতে ‘ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার’ সম্মাননা তুলে দেবেন তিনি।

সরকারপ্রধানের জাপান সফরে দেশটির সঙ্গে বেশ কয়েকটি সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে বলেও জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী দেশ জাপান। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, পরিবহন, টেলিযোগাযোগ, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অবকাঠামো, পরিবেশ, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং অন্যান্য খাতে বড় অংকের বিনিয়োগ রয়েছে দেশটির। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক উন্নয়ন সহযোগিতা (ওডিএ) হিসেবে বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণ বিতরণসহ নানাভাবে বাংলাদেশকে উন্নয়ন সহযোগিতা করে আসছে টোকিও।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে জাইকার বৈশ্বিক ঋণ প্রতিশ্রুতির গন্তব্য দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। জাইকার মোট বৈশ্বিক ঋণ প্রতিশ্রুতির ২৬ দশমিক ৮ শতাংশেরই গন্তব্য হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। গত অর্থবছরেও (২০২১-২২) বাংলাদেশকে মোট ১৭৩ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ ঋণ ও অনুদান হিসেবে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জাপান।

এখন পর্যন্ত দেশে সবচেয়ে বেশি দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা এসেছে জাপান থেকে। দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন হয় ১৯৭২ সালে। ওই সময় থেকে এ পর্যন্ত জাপানের কাছ থেকে ঋণ, অনুদানসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সহায়তা হিসেবে মোট ২ হাজার ৮৭৮ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে শুধু ঋণ হিসেবে প্রতিশ্রুত অর্থ ২ হাজার ৫১৫ কোটি ডলারের সমপরিমাণ। এর মধ্যে গত অর্থবছর পর্যন্ত ১ হাজার ৪৯১ কোটি ৫০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ ছাড় হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন জাপান সফর দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরো জোরদার করবে বলে প্রত্যাশা করছেন কূটনীতিকরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here