আরও দুই মাস বাড়ল ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভের মেয়াদ

ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভের আওতায় ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানির মানবিক করিডোর আরও দুই মাসের জন্য অব্যাহত থাকবে। রাশিয়া চুক্তি থেকে সরে আসতে পারে-এমন আশঙ্কার মধ্যেই চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির খবরটি এল। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বিষয়টিকে ‘বিশ্বের জন্য খুশির খবর’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

গত বছরের ২২ জুলাই জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চুক্তিটি হয়েছিল। চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের ভূমিকা রয়েছে। তিনিই সম্প্রতি টেলিভিশনে বক্তব্য রাখার সময় সুখবরটি জানান। পরে রাশিয়া, ইউক্রেন ও জাতিসংঘ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর কৃষ্ণ সাগরীয় বন্দরগুলো অবরোধ করে রাখে রুশ সেনারা। এতে সমুদ্রপথে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। তবে ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ চুক্তি স্বাক্ষরের পর ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য পরিবহনের সুযোগ তৈরি হয়।

চুক্তিতে রাশিয়ার শস্য রপ্তানিতেও কিছু সুবিধা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাশিয়ার অভিযোগ, সেই সুবিধা তারা পাচ্ছে না। এ কারণে ক্রেমলিন হুমকি দেয়, তাদের শর্তগুলো পূরণ না হলে ১৮ মের পর চুক্তির মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না। তবে শেষ পর্যন্ত তারা আরও দুই মাসের জন্য চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে সম্মত হয়েছে।

এক বিবৃতিতে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, ‘বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তায় অবদান রাখার বড় একটি সুযোগ এটি। তবে এই অবদান কেবল কথায় নয়, চুক্তি অনুযায়ী রাখা হবে। চরম খাদ্যসংকটে থাকা দেশগুলোকে সাহায্য করা আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ইস্তাম্বুলে গত বছর যে চুক্তি হয়েছিল, সেটির বিষয়ে আমাদের নীতিগত পর্যালোচনায় কোনো পরিবর্তন আসেনি। চুক্তির শর্ত বাস্তবায়নে যেসব ঘাটতি রয়েছে, সেগুলো অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব পূরণ করতে হবে।’

উল্লেখ্য, বৈশ্বিক গম সরবরাহে রাশিয়া ও ইউক্রেন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল এই দুই দেশ থেকে খাদ্যশস্য আমদানির ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর রাশিয়ার ওপর বহুমুখী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে পশ্চিমা দেশগুলো। তবে রাশিয়া থেকে খাদ্য ও সার রপ্তানি এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় নেই। কিন্তু রাশিয়ার অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞার জেরে আর্থিক লেনদেন, লজিস্টিকস ও বিমা নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তাতে দেশটি থেকে খাদ্য ও সার সরবরাহও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here