আইএমওর কার্বন শুল্ক নিয়ে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা

ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) গ্রিনহাউজ গ্যাস ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক গত শুক্রবার শেষ হয়েছে। আজ (৩ জুলাই) লন্ডনে শুরু হওয়া আইএমওর মেরিন এনভায়রনমেন্ট প্রটেকশন কমিটির (এমইপিসি) ৮০তম সেশনের আগে এটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈঠক। অবশ্য বৈঠকটির পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যে আইএমও যে সংশোধিত কৌশল গ্রহণ করেছে, তা বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হবে না।

সমুদ্র শিল্পে সবুজ রূপান্তরকে গতিশীল করতে যে বিষয়টির ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, সেটি হলো কার্বন শুল্ক আরোপ। নিঃসরণের ওপর বাজারভিত্তিক শুল্ক নির্ধারণ ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ওপর ভর্তুকি প্রদান না করা হলে গ্রিন অ্যামোনিয়া অথবা গ্রিন মিথানলের মতো ব্যয়বহুল জ্বালানির সর্বাত্মক ব্যবহার নিশ্চিত করা দুরূহ হবে।

জ্বালানি বিশ্লেষক মারগাউক্স মুর বলেন, ‘যে জায়গাটাতে আমরা এখনো পিছিয়ে রয়েছি, সেটি হলো কার্বন শুল্কের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছনো। স্বল্প নিঃসরণকারী জ্বালানির প্রচলনে সহায়তার জন্য আমাদের অবশ্যই কার্বন নিঃসরণের ওপর শুল্ক আরোপ করতে হবে। তা না হলে নিঃসরণ কখনোই বন্ধ করা যাবে না।’

আইএমওর তেল-নির্ভর দেশগুলোকে কার্বন শুল্কের পক্ষে রাজি করানো বেশ কঠিন কাজ হবে। তবে চলতি বছরই এ বিষয়ে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মতামত জানতে ভোটের আয়োজন করতে পারে আইএমও। গ্রিনহাউস ওয়ার্কিং গ্রুপের সদ্যসমাপ্ত বৈঠক পর্যবেক্ষণকারী কনসাল্টিং ফার্ম ইউএমএএসের তথ্য অনুযায়ী, আইএমওর বেশিরভাগ সদস্য রাষ্ট্র বেশ কয়েকটি মধ্যমেয়াদি পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। এর মধ্যে কার্বন শুল্ক আরোপের বিষয়টিও রয়েছে।

বর্তমানে একটি কার্বন শুল্ক প্রস্তাবনা চূড়ান্ত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। অবশ্য কিছু সংখ্যক সদস্য রাষ্ট্র এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করে আসছে।

আইএমওর বর্তমান লক্ষ্যমাত্রা হলো প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে বর্ণিত নিঃসরণমুক্ত হওয়ার লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক অর্জন করা। তবে পরিবেশ আন্দোলনকর্মী ও সমুদ্র খাতসংশ্লিষ্ট কিছু গ্রুপের মতে, ২০৫০ সালের জন্য প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, আইএমওর নিঃসরণ লক্ষ্যমাত্রা তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া দরকার।

এমইপিসির ৮০তম সেশনে ২০৩০ সাল নাগাদ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ ২০ শতাংশ ও ২০৪০ সাল নাগাদ ৭০ শতাংশ কমানোর অন্তর্বর্তীকালীন লক্ষ্যমাত্রার প্রস্তাব উত্থাপন করার কথা রয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অনুমোদিত হলে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ নিয়ে আইএমওর কৌশল প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে অবদান রাখতে ব্যর্থ হবে বলে মনে করছে ইউএমএএস।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here