রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঝুঁকির মধ্যেই ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগরীয় ওডেসা বন্দর ছেড়েছে একটি কনটেইনার জাহাজ। জোসেফ শুলতে নামের হংকংয়ের পতাকাবাহী জাহাজটি গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকেই ওডেসা বন্দরে আটকে ছিল।
গত মাসে নিরাপদে খাদ্যশস্য পরিবহনের চুক্তি ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয় রাশিয়া। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী রাশিয়াকে খাদ্য ও সার রপ্তানিতে সুযোগ-সুবিধা ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছে না-এমন অভিযোগ থেকেই চুক্তির মেয়াদ আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় তারা। এর আগে গত ১৮ মে চুক্তির মেয়াদ দুই মাসের জন্য বাড়াতে সম্মত হয় রাশিয়া।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর কৃষ্ণ সাগরীয় বন্দরগুলো অবরোধ করে রাখে রুশ সেনারা। এতে সমুদ্রপথে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলশ্রæতিতে বৈশ্বিকভাবে খাদ্য সংকট ও মূল্যস্ফীতি দেখা দেয়। এ সংকট দূর করতে গত বছরের ২২ জুলাই জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ চুক্তি স্বাক্ষর হয় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। চুক্তিটির ফলে যুদ্ধকালীন দামামার মধ্যে কৃষ্ণ সাগর দিয়ে খাদ্যশস্য পরিবহনের নিরাপদ করিডোর তৈরি হয়েছিল।
কিন্তু রাশিয়া সরে আসার পর থেকেই ইউক্রেনের বন্দরগুলো আবার অনিরাপদ হয়ে ওঠে। ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে কৃষ্ণ সাগরীয় বন্দরগুলোর পরিবর্তে রোমানিয়া হয়ে খাদ্যশস্য রপ্তানির লক্ষ্যে দানিউব নদীর তীরে অবস্থিত অভ্যন্তরীণ বন্দরগুলো ব্যবহার করতে শুরু করেছিল ইউক্রেন। কিন্তু রাশিয়া হামলা চালায় সেখানেও। চলতি মাসেই দানিউব তীরবর্তী ইজমাইল বন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রুশ সেনারা।
এসব ঝুঁকির মধ্যেই গত সপ্তাহে ইউক্রেন তাদের বন্দরগুলোয় আটকে থাকা জাহাজগুলোকে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ দিতে অস্থায়ী ভিত্তিতে ‘মানবিক করিডোর’ চালুর ঘোষণা দেয়। দেশটি দাবি করে, এই করিডোর যেন কোনো সামরিক কাজে ব্যবহৃত না হয়, সেই স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে তারা। ইউক্রেন ঘোষিত এই করিডোর ব্যবহারকারী প্রথম জাহাজ হলো জোসেফ শুলতে।