রাশিয়ার কৃষ্ণসাগরীয় বন্দরগুলো থেকে তেল পরিবহনকারী ট্যাংকারগুলোর জন্য ‘যুদ্ধকালীন ঝুঁকি প্রিমিয়াম’ বাড়িয়েছে বিমা কোম্পানিগুলো।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানো শুরু করার পর একদফা নিয়মিত প্রিমিয়ামের পাশাপাশি যুদ্ধকালীন ঝুঁকি প্রিমিয়াম আরোপ করেছিল কোম্পানিগুলো। মাঝে ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ চালুর ফলে কৃষ্ণসাগর দিয়ে জাহাজ চলাচলে ঝুঁকি কিছুটা কমেছিল। তবে গত মাসে রাশিয়া চুক্তি থেকে সরে আসার পর এই ঝুঁকি আবার বেড়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় দেশের কৃষ্ণসাগরীয় বন্দরগুলোয় সামরিক কর্মতৎপরতা বেড়েছে। অবশ্য ইউক্রেনের বন্দরগুলোয় কয়েক দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর পাওয়া গেলেও এখন পর্যন্ত রুশ বন্দর থেকে তেল বোঝাই করা কোনো ট্যাংকার হামলার শিকার হয়নি। তবে যত সময় গড়াচ্ছে, এই ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। মূলত এ কারণেই যুদ্ধকালীন ঝুঁকি প্রিমিয়াম বাড়িয়েছে বিমা কোম্পানিগুলো।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এতদিন যুদ্ধকালীন ঝুঁকি প্রিমিয়াম ছিল কার্গোমূল্যের প্রায় ১ শতাংশ। এখন তা বাড়িয়ে ১ দশমিক ২ থেকে ১ দশমিক ২৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই প্রিমিয়াম বৃদ্ধির ফলে একটি সুয়েজম্যাক্স ট্যাংকারকে (যেগুলো ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ২ লাখ টন তেল পরিবহন করতে সক্ষম) প্রতিবার রাশিয়া থেকে ভারতে তেল পরিবহনের জন্য প্রায় ২ লাখ ডলার বাড়তি প্রিমিয়াম দিতে হবে। কোম্পানিগুলোর নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ট্যাংকার পরিচালনাকারীদের প্রিমিয়ামবাবদ মোট গুণতে হবে প্রায় ১০ লাখ ডলার।
অবশ্য এই বাড়তি প্রিমিয়াম রাশিয়া থেকে তেল রপ্তানির ব্যয় খুব বেশি বাড়াবে না। ইউক্রেনে সামরিক অভিযান পরিচালনার জেরে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা আরোপ সত্ত্বেও দেশটির তেল রপ্তানি অনেক বেড়েছে। এমনকি ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলারের অয়েল প্রাইস ক্যাপও রাশিয়ার জ্বালানি রাজস্ব কমাতে পারেনি।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বাড়তি প্রিমিয়াম কেবল রাশিয়ার তেল পরিবহনকারী ট্যাংকারের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। কাজাখস্তানে উৎপাদিত তেল পরিবহন করলে যুদ্ধকালীন ঝুঁকি প্রিমিয়াম আগের মতোই প্রায় ১ শতাংশ থাকবে।