নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ইরানি তেল পরিবহনের অভিযোগ তুলে গত এপ্রিলে সিঙ্গাপুর উপকূলে সুয়েজ রাজন নামক একটি ট্যাংকার আটক করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আটকের পর ট্যাংকারটি থেকে অপরিশোধিত তেল অপসারণ ও বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি সেই তেল অপসারণ শুরু করায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরান।
সিঙ্গাপুরে আটকের পর সুয়েজ রাজনকে ১৩ হাজার নটিক্যাল মাইল দূরে যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে আকারে বড় হওয়ার কারণে জাহাজটিকে হিউস্টন বন্দরে ভেড়ানো সম্ভব হয়নি। ৮ লাখ ব্যারেল তেলসহ জাহাজটিকে বন্দরের বহির্নোঙরে রাখা হয়। সেখান থেকে লাইটার জাহাজে করে ট্যাংকারের তেল হিউস্টনের একটি শোধনাগারে নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে পরিশোধিত তেল বিক্রি করা এবং তা থেকে অর্জিত মুনাফা সন্ত্রাসবাদে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তায় কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।
তবে ইরানের বিরাগভাজন হওয়ার শঙ্কায় পারস্য উপসাগরে চলাচলকারী কোনো লাইটার জাহাজই গত কয়েক মাস সুয়েজ রাজন থেকে তেল অপসারণে আগ্রহী হয়নি। পরবর্তীতে সুয়েজ রাজনের পরিচালনাকারী কোম্পানি সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসে এবং গত ২০ আগস্ট ট্যাংকার থেকে প্রথম দফায় তেল অপসারণ করা হয়। তেল অপসারণের পর বন্দরের আউটারেজে নোঙ্গর করে রাখা ট্যাংকারটির ড্রাফট লেভেল আগের চেয়ে কমেছে। এ থেকেও তেল অপসারণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।
সুয়েজ রাজনে থাকা তেল যে ইরানে উত্তোলিত, সেই বিষয়টি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি নিশ্চিত করেছেন। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ট্যাংকার আটক, তেল অপসারণ, তেল বিক্রি ও অর্জিত মুনাফা সন্ত্রাসবাদে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বণ্টনের সিদ্ধান্তে তেহরানের অসন্তোষের বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি।
কানানি জানান, ইরানি সরকারের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য সম্প্রতি তেহরানস্থ সুইস দূতাবাসের প্রতিনিধিকে তলব করা হয়। গত চার দশক ধরে ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই যুক্তরাষ্ট্রের। এমতাবস্থায় ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে পরোক্ষ সংযোগ স্থাপনে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে সুইস দূতাবাস। নিজেদের অসন্তোষের বার্তা মার্কিন প্রশাসনের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই মূলত সুইস দূতাবাসের প্রতিনিধিকে তলব করেছে তেহরান।