নৌপ্রটোকলের আওতায় বাড়ছে ভারত-বাংলাদেশের বাণিজ্য

নৌপ্রটোকলের আওতায় নৌপথে খাদ্যপণ্য রপ্তানি কার্যক্রম উদ্বোধন করছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। ছবিটি চলতি বছরের ১৬ মার্চ তোলা।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রপ্তানি বাণিজ্যের পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য সড়কপথের চেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে নৌপথ। প্রতি বছরই দুই দেশের মধ্যে নৌপথে বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়ছে। আর এ পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশি জাহাজের অংশীদারিত্ব বেশি। ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই দেশের মধ্যে নৌপথে পণ্য আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার হওয়া জাহাজের ৯২ শতাংশই বাংলাদেশি। বাকি মাত্র ৮ শতাংশ পণ্য পরিবহন হয়েছে ভারতীয় জাহাজের মাধ্যমে। আগে নৌপথে শুধু সিমেন্ট খাতের কাঁচামাল আমদানি হতো। তবে এখন চাল, গম, ভুট্টা, পাথরসহ অন্যান্য পণ্যও আমদানি হচ্ছে। এ কারণে পণ্য পরিবহনের পরিমাণ বেড়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সাম্প্রতিক এক বৈঠকে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) দেয়া এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

সংসদীয় কমিটিতে দেয়া প্রতিবেদনে গত পাঁচ বছরে আমদানি-রপ্তানির তথ্য তুলে ধরা হয়। সেখানে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২৬ লাখ ২৪ হাজার টনের বেশি। এসব পণ্য আনা-নেওয়ায় বাংলাদেশের ৩ হাজার ১১টি জাহাজের বিপরীতে ভারতের মাত্র ২৯টি জাহাজ ব্যবহৃত হয়। সেই হিসেবে ওই বছর পণ্য পরিবহনের ৯৯ শতাংশই হয়েছে বাংলাদেশি জাহাজে।

পরের অর্থবছর অর্থাৎ ২০১৭-১৮ সালে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২৭ লাখ টনের বেশি। এসব পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশের জাহাজ ব্যবহার হয়েছে ৩ হাজার ৩০০টি। পাশাপাশি ভারতের ৮৬টি জাহাজ ব্যবহৃত হয়েছে। সেই বছরও পণ্য পরিবহন কাজে ব্যবহৃত জাহাজের ৯৮ শতাংশই ছিল বাংলাদেশি।

২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২৪ লাখ টনের বেশি পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে বাংলাদেশের জাহাজ ব্যবহার হয়েছে ৯৫ শতাংশ বা ২ হাজার ৬৮৫টি। বিপরীতে ভারতের জাহাজ ব্যবহৃত হয়েছে ৫৯টি। এর পরের অর্থবছরে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২৭ লাখ ৮০ হাজার টনের বেশি। সে বছর ৯৬ শতাংশ অর্থাৎ বাংলাদেশের ৩ হাজার ১৯২টি জাহাজে পণ্য পরিবহন করা হয়। বিপরীতে ভারতের জাহাজ ব্যবহৃত হয়েছে ৭০টি।

সবশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে নৌপথে দুই দেশের আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩৯ লাখ ৫৯ হাজার টনের বেশি, যা আনা-নেওয়ার কাজে বাংলাদেশের জাহাজ ব্যবহার হয়েছে ৩ হাজার ৯১৩টি, শতাংশের হিসেবে যা ৯২। বিপরীতে ভারতের জাহাজ ব্যবহৃত হয়েছে ২২৬টি।

সংসদীয় কমিটিতে দেয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নৌপথে বাণিজ্যের জন্য ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেড (পিআইডব্লিউটিটি) চলমান রয়েছে। ২০০০ সালের আগ পর্যন্ত শুধু ভারতীয় জাহাজের মাধ্যমে পণ্য আনা-নেয়া করা যেত। ২০০০ সালের পর এ কাজে বাংলাদেশের জাহাজও সম্পৃক্ত হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here