ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগরীয় বন্দরগুলোয় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরছে

রুশ হামলার হুমকি সত্তে¡ও পুনরায় কার্যক্রম শুরু করেছে ইউক্রেনের প্রধান তিনটি বন্দর। দেশটিতে উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য রপ্তানির লক্ষ্যে কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী বন্দর তিনটি সচল করা হয়েছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া সামরিক অভিযান শুরুর আগে কৃষ্ণসাগর দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে খাদ্যশস্য রপ্তানি করত ইউক্রেন। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে নিরাপদে রপ্তানি কার্যক্রম চালিয়ে নিতে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় রাশিয়ার সঙ্গে ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ স্বাক্ষর করে ইউক্রেন। তবে চলতি বছর জুলাইয়ে সেই চুক্তি থেকে সরে আসে রাশিয়া।

ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ অকার্যকর হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়ে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী ও রপ্তানিকারক দেশ ইউক্রেন। যুদ্ধের কারণে প্রধান বাণিজ্য পথ অবরুদ্ধ থাকায় চলতি ২০২৩-২৪ মৌসুমে (জুলাই-জুন) এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানি ২৪ শতাংশ কমেছে।

৪ অক্টোবর দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত মাত্র ৬৮ লাখ ২০ হাজার টন শস্য রপ্তানি করেছে ইউক্রেন, যেখানে ২০২২-২৩ মৌসুমের একই সময়ে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৮৯ লাখ ৯০ হাজার টন।

ব্যবসায়ী ও কৃষক সমিতিগুলোর মতে, রাশিয়া ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগরীয় বন্দরগুলো অবরুদ্ধ করে রাখায় এবং দানিয়ুব নদীর তীরবর্তী বন্দরগুলোয় হামলা চালানোর কারণে রপ্তানির পরিমাণ এতটা হ্রাস পেয়েছে। শস্য রপ্তানি চাঙ্গা করতে এবং ইউক্রেনের বন্দরগুলোয় আটকা পড়া জাহাজগুলোকে গন্তব্যে পৌঁছনোর সুযোগ করে দিতে গত আগস্টে কৃষ্ণসাগরে একটি অস্থায়ী মানবিক করিডোর ঘোষণা করে কিয়েভ। ইউক্রেন ঘোষিত এই করিডোরটির অবস্থান কৃষ্ণসাগরের পশ্চিমাঞ্চলে। এটি ন্যাটোভুক্ত দেশ রোমানিয়া ও বুলগেরিয়ার উপকূল ঘেঁষে গেছে।

মানবিক করিডোর চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ১০টি জাহাজ এই পথ দিয়ে কৃষ্ণসাগর পাড়ি দিয়েছে। দেশটির নৌবাহিনী জানায়, বর্তমানে ১২টি জাহাজ এই পথ ব্যবহার করে ইউক্রেনে প্রবেশের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। বিদেশী বীমাকরী প্রতিষ্ঠানগুলো এরই মধ্যে এই পথে চলাচলকারী জাহাজগুলোকে বীমা কভারেজের আওতায় আনতে শুরু করেছে।

মানবিক করিডোর ব্যবহারকারী জাহাজগুলো ক্লিয়ারওয়াটার ডায়নামিকসের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে উচ্চ ঝুঁকিযুক্ত অঞ্চলে জাহাজগুলোকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here