স্যার জন হকিন্স ছিলেন একজন ইংরেজ নেভাল কমান্ডার। এছাড়া তিনি ছিলেন একজন প্রাইভেটিয়ার ও আটলান্টিক অঞ্চলে ইংরেজদের দাস বাণিজ্যের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক। প্রাইভেটিয়ার হলেন ব্যক্তিগত অস্ত্রসজ্জিত জাহাজের মালিক, যে জাহাজের নিজস্ব জনবল ও সরকারি অনুমোদন রয়েছে। যুদ্ধকালে সরকার চাইলে এই জাহাজ ব্যবহার করতে পারে।
১৫৩২ সালে জন হকিন্সের জন্ম। তিনি তার বড় ভাইয়ের সঙ্গে মিলে বিভিন্ন ইংরেজ উপনিবেশে ব্যবসা করে বেশ খ্যাতি ও মুনাফা অর্জন করেছিলেন। হকিন্স নিজের পরিচয় দিতেন ক্যাপ্টেন জেনারেল হিসেবে, যিনি নিজস্ব ফ্লোটিলার পাশাপাশি ইংলিশ রয়েল নেভির জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি রয়েল নেভির অ্যাডমিরালদের সঙ্গে নিজের পার্থক্য করতেন এভাবে-অ্যাডমিরালরা কেবল প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করতেন আর তিনি সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিতেন। ১৫৮৮ সালে স্প্যানিশ আর্মাডাদের সঙ্গে যুদ্ধে রয়েল নেভির ভাইস অ্যাডমিরাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জন হকিন্স। সেই যুদ্ধে জয় হয়েছিল রয়েল নেভির।
জন হকিন্স ১৫৭৮ থেকে ১৫৯৫ সাল পর্যন্ত রয়েল নেভির ট্রেজারারের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময় তিনি বাহিনীর পুরনো জাহাজগুলোকে নতুন করে নির্মাণ ও দ্রুতগতির জাহাজের নকশা প্রণয়নের ওপর জোর দেন। ১৬ শতকের অন্যতম প্রভাবশালী নাবিক হিসেবে তিনি এলিজাবেথান নেভির প্রধান কারিগরের ভূমিকা পালন করেছেন।
রয়েল নেভির প্রভাব বৃদ্ধিতে জন হকিন্স ও তার চাচাত ভাই স্যার ফ্রান্সিস ড্রেকের ভূমিকা ছিল অনেক বেশি। তাদের দুজনের মৃত্যুর পর রয়েল নেভির প্রতিপত্তি অনেক কমে গিয়েছিল, যেটি ফিরে পেতে বাহিনীটির বেশ কয়েক দশক সময় লেগেছে।
১৫৯৫ সালের ১২ নভেম্বর মৃত্যু হয় জন হকিন্সের। সাগরে বর্ণিল জীবন কাটানো এই ক্যাপ্টেন জেনারেলের মৃত্যুও হয়েছে সাগরের বুকে।