স্যার আর্নেস্ট হেনরি শ্যাকলটন

স্যার আর্নেস্ট হেনরি শ্যাকলটন ছিলেন একজন অ্যাংলো-আইরিশ অভিযাত্রী। অ্যান্টার্কটিকায় ব্রিটিশদের তিনটি অভিযানে নেতৃত্ব দেন তিনি। ‘হিস্টোরিক এজ অব অ্যান্টার্কটিক এক্সপ্লোরেশন’ হিসেবে পরিচিত সময়কালের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন এই অভিযাত্রী।

শ্যাকলটনের জন্ম আয়ারল্যান্ডের কিলডেয়ার কাউন্টির কিলকি গ্রামে, ১৮৭৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি। ১০ বছর বয়সে তার পরিবার সেখান থেকে দক্ষিণ লন্ডনের পাশর্^বর্তী শহরতলি সিডেনহামে। শ্যাকলটনের প্রথম মেরু অভিযান শুরু হয় ১৯০১ সালে, ক্যাপ্টেন রবার্ট ফ্যালকন স্কটের অভিযাত্রী দলের থার্ড অফিসার হিসেবে। তবে স্বাস্থ্যগত কারণে এই অভিযান শেষ না করেই বাড়ি ফিরে আসতে হয় তাকে।

তবে ১৯০৭-০৯ সালের নিমরোদ অভিযানের সময় শ্যাকলটন তার তিন সঙ্গীসহ ৮৮ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশে (দক্ষিণ মেরু থেকে মাত্র ১৮০ কিলোমিটার দূরে) পৌঁছাতে সক্ষম হন, যা মেরু অভিযানের ইতিহাসে অগ্রগামিতার নতুন রেকর্ড তৈরি করেছিল। এছাড়া শ্যাকলটনের অভিযাত্রী দলের সদস্যরা অ্যান্টার্কটিকার সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মাউন্ট ইরেবুসে আরোহণ করেছিলেন। এই অর্জনের জন্য রাজা সপ্তম এডওয়ার্ড শ্যাকলটনকে নাইটহুড উপাধিতে ভূষিত করেন।

স্যার শ্যাকলটন আরও একটি কারণে ইতিহাসের পাতায় বিখ্যাত হয়ে আছেন। সেটি হলো অ্যান্টার্কটিকার রস সাগর ও ওয়েডেল সাগরের মধ্যে প্রথম ল্যান্ড ক্রসিং অভিযানের প্রচেষ্টা। ২৭ জনের একদল অভিযাত্রী তিন মাস্তুলের ১৪৪ ফুট দীর্ঘ জাহাজ এন্ডুুরেন্সে করে ১৯১৪ সালে এই যাত্রা শুরু করেন। এই অভিযানেই কাঠের তৈরি জাহাজটি ডুবে যায়, যার ধ্বংসাবশেষে সন্ধান সম্প্রতি মিলেছে।

আর্নেস্ট শ্যাকলটনের ব্যক্তিগত জীবন খুব একটা স্থিতিশীল ছিল না। দ্রুত সম্পদ গড়ার তাড়নায় তিনি ব্যবসা শুরু করলেও তাতে ব্যর্থ হন। উপরন্তু বড় অংকের ঋণের বোঝা চেপে যায় তার কাঁধে। এই বোঝা নিয়েই ১৯২২ সালের ৫ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন শ্যাকলটন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here