‘নদী নিয়ে ছিনিমিনি খেলার দিন শেষ!’

একুশ শতকের পৃথিবীতে উন্নয়নের রোল-মডেল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। এতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে সরকারের ব্যস্ততম নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়। জাতীয় অগ্রযাত্রায় বহুমাত্রিক কার্যক্রম সম্পাদন হয়ে থাকে এই মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে। নৌ-পথে যোগাযোগ, নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা, নৌ-চ্যানেলের নাব্যতা বৃদ্ধি, অভ্যন্তরীণ নৌবন্দর উন্নয়ন ও তাদের আধুনিকায়ন, চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের উন্নয়ন, স্থল বন্দরসমূহের উন্নয়ন, সমুদ্রপথে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দক্ষ নাবিক গড়ে তোলা তার মধ্যে অন্যতম। অধীনস্থ ১২টি দপ্তর ও সংস্থার মাধ্যমে এসব কাজ সম্পাদন করে এ মন্ত্রণালয়।

চলমান এ উন্নয়ন অভিযাত্রার সুযোগ্য নেতৃত্বে রয়েছেন মাননীয় নৌপরিবহন মন্ত্রী জনাব শাজাহান খান, এমপি। নদীপ্রবন মানুষটি নদীর মতোই সহজ আর সাবলীল। জনগণের মধ্যে থেকে উঠে আসা সাহসী, বিচক্ষণ আর দূরদর্শী ব্যক্তিত্ব। নদী বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবেকিংবা নদী নিয়ে ছিনিমিনি খেলার দিন শেষ’-প্রবাদপ্রতিম এমত সাহসী উচ্চারণ আমরা শুনেছি তাঁরই প্রেরণাদায়ী কন্ঠে।

নৌপরিবহন মন্ত্রীর গতিশীল নির্দেশনায় ছয় বছরের অধিক সময়কালে দেশের প্রধান দুটি সমুদ্র বন্দরের ধারণক্ষমতা বেড়েছে আশাতীত পরিমাণ। চট্টগ্রাম বন্দরের সর্বস্তরের তথ্য প্রযুক্তির পাশাপাশি অটোমেশনের সূচনা ঘটেছে। ভিটিএমআইএস এর মাধ্যমে কর্ণফুলী চ্যানেলে জাহাজ চলাচল ও জাহাজের সার্বক্ষণিক তদারকি নিশ্চিত করা হয়েছে। সুন্দরবনের বৈচিত্র্য রক্ষায় মংলা-ঘষিয়াখালি নৌ পথ চালু হয়েছে। তৃতীয় সমুদ্র বন্দর হিসাবে উদীয়মান পায়রা বন্দর স্থাপনায় পন্টুন, ক্রেন ও সোলার লাইটপোস্ট বসানো হয়েছে। বেনাপোলসহ অন্যান্য স্থল বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। তিনটি ড্রেজার সংগ্রহের মাধ্যমে ৬২৮ কিলোমিটার নৌ পথের নাব্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে। এমভি বাঙ্গালী এবং এমভি মধুমতি নামে দুটি যাত্রীবাহি জাহাজ নির্মাণ হয়েছে। সংগ্রহ করা হয়েছে দুটি উদ্ধারকারী জলযান। দেশপ্রেমিক এই স্বপ্নদ্রষ্টার আশু পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে ৫৩টি নৌ পথের ক্যাপিটাল ড্রেজিং, বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষা ও তুরাগ নদীর বর্জ্য অপসারণ, মংলা-ঘষিয়াখালি নৌ পথের নাব্যতা পুনরুদ্ধারে নৌপ্রটোকল রুটে ড্রেজিং, নৌপ্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট স্থাপনসহ বহুবিধ।

বন্দরবার্তার সঙ্গে অন্তরঙ্গ আলোচনায় উল্লেখিত এসব বিষয়ের পাশাপাশি জাতীয় উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতি বিষয়ে তথ্যবহুল ও মূল্যবান কথা বলেছেন মাননীয় নৌপরিবহন মন্ত্রী।

বন্দরবার্তা

নদীনির্ভর দেশ বাংলাদেশ। চিরকাল নদীর আদরে লালিত। অথচ দেশের অনেকগুলো নদী আজ হতশ্রী। অনেকেই মৃতপ্রায়। নদীরক্ষার পথে একটি দূরতিক্রম্য বাধা ভূমিদস্যু প্রভাবশালী মহলের যথেচ্ছ নদীদখল এবং অপরিকল্পিত শিল্প-কারখানার অবিরাম নদীদূষণ। এ অবস্থার অবসানে নদী রক্ষা কমিশনের চলমান লড়াইয়ের অগ্রভাগে রয়েছেন আপনি। জনগণের কাতারে দাঁড়িয়ে সাহসী নেতৃত্ব দিচ্ছেন ষড়যন্ত্রকারী অপশক্তির বিরুদ্ধে। এতে কতটুকু উত্তরণ ঘটেছে পরিস্থিতির? এবং সামনের দিনগুলোয় কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন?

নৌপরিবহন মন্ত্রী

বাংলাদেশকে সামনের দিকে নিতে হলে দেশের প্রত্যেকটি নদীকে বাঁচিয়ে তুলতে হবে। দীর্ঘসময় ধরে অপরাজনীতির দাপট দেখিয়ে অনেক নদীকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। নদীর সীমানা পিলার নিয়ে রাজনীতি হয়েছে। গণমুখী বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বদলাতে আরম্ভ করেছে সবকিছু। নদীরক্ষা কমিশনের কাজের পরিধি ও ক্ষমতা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। নদী নিয়ে ইঁদুর-বিড়াল খেলার দিন শেষ হয়েছে। একটি শিল্প-কারখানার উদ্দেশ্য কী? জনগণের জীবনযাত্রার উন্নতির লক্ষ্যে উৎপাদন চালিয়ে যাওয়া। কিন্তু এ কাজ করতে গিয়ে, লোভের বশবর্তী হয়ে বিবেকহীনভাবে, সেই জনগণেরই সর্বনাশ করছে তারা। প্রতিনিয়ত কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য নদীতে উগরে দিয়ে নদীকে হত্যা করছে। এতে ধ্বংস হচ্ছে মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণী। নদীর মাধ্যমে বিষাক্ত বর্জ্য গিয়ে মিশছে দুই তীরের জমিতে। ফসল উৎপাদনের সামর্থ্য হারিয়ে ফেলছে জমি। আমাদের বুঝতে হবে, দূষণ আক্রান্ত এসব নদীর মাছ, এসব জমির উৎপাদিত শাক-সব্জিও জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। কোনমতেই এ অবস্থা আর চলতে দেয়া যায় না। বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা আর তুরাগ নদী দূষণমুক্ত করে তাদের জীবন ফিরিয়ে আনতে বর্জ্য অপসারণ অভিযান শুরু হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশের মানুষ ও বৃহত্তর কল্যাণের স্বার্থেই এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছি আমরা। বারংবার তাগাদার পরও যারা কারখানায় ইটিপি ব্যবহার করবেন না তাদের কারখানা বন্ধ করে দেয়া হবে।

আমরা জানি, একদিনে সাফল্য আসবে না। লন্ডনের টেমস নদী দূষণমুক্ত করতে ৮০ বছর লেগেছে। কোরিয়ার হাংহাই নদীর লেগেছে ৩০ বছর। সবে শুরু করলেও আশা করছি ১০ বছরের মাথায় সুফল দেখতে পারবো আমরাও।

বন্দরবার্তা

বাংলাদেশে বর্তমানে নৌ চলাচল উপযোগী নদীর প্রকৃত সংখ্যা কত? আমরা জানি দেশের বৃহত্তর জনসাধারণের প্রতিদিনকার যাতায়াতের প্রধানতম অবলম্বন নৌ পথ। সে বিবেচনায় বর্তমান নৌ পথ বাড়াতে আপনারা নতুন কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন?

নৌপরিবহন মন্ত্রী

আপনার এ জিজ্ঞাসার উত্তরে একটু পেছনের দিকে ফিরে তাকানো যাক। ১৯৫৫ সালের জরিপ অনুসারে আমাদের নদীর সংখ্যা সাতশর মতো। মাঠপর্যায়ে যদিও এ অর্ধেকই খুইয়ে বসে আছি আমরা বিগত অর্ধশতকে। আমাদের পরিসংখ্যানে, বর্র্তমানে ৩১০টি নদী রয়েছে যেগুলো শতভাগ নৌ চলাচলের উপযোগী। পৃথিবীর একটি মাত্র দেশে এত বেশি নদী খুব অল্পই আছে। সেদিক থেকে আমরা বড়ই সৌভাগ্যবান। ইতিমধ্যেই নদী রক্ষায় ৫০০ মিলিয়ন ডলারের একটি বৃহৎ প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ টাকায় ৫৩টি নৌ পথ খনন করা হবে। অভ্যন্তরীণ নৌ পথে ৯০ লক্ষ ঘনমিটার ক্যাপিটাল ড্রেজিং করা হবে। নদীগুলোর পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই অকালবন্যা তৈরি হচ্ছে। নদীকে নিজের মতো চলতে দিতে হবে। তাহলেই সম্ভব হবে বিপর্যয় রোধ করা। প্রতিদিন নদীপথের ওপর নির্ভরশীল ব্যবসায়ী ছাড়াও লাখ লাখ যাত্রী। আমরা তাদের কথা ভাবছি। নদী বিষয়ক টাস্ক ফোর্স নিয়মিত কাজ করছে এসব নিয়ে। নদী ড্রেজিংয়ের কাজে এখন মেইনটেন্যান্স ড্রেজিং বলে একটি পদ্ধতি অবলম্বন করছি আমরা। এতে ৬-৭ বছরের জন্য একটি চ্যানেলের ড্রেজিং করা, তার নিয়োমিত তদারকি এবং সারাবছর নাব্যতা বজায় রাখাটাও পড়বে একই দায়িত্বের মধ্যে। ফলে কিছুদিন পরপর নতুন টেন্ডার ডাকতে হবে না। এতে আগের তুলনা অনেক বেশি কাজ হবে বলে আমরা আশাবাদী।

এছাড়া মেঘনা-গোমতী সেতুর ড্রেজিং চলছে পুরোদমে। নদীরক্ষায় ২০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ হয়েছে। আরও ৫০ কিলোমিটারের কাজ শুরু হচ্ছে শিগগিরই। পাবনায় বড়াল নদীর ক্রসবার অপসারণ করে নদীর প্রবাহ চালু করা হচ্ছে। নতুন চারটি এক্সক্যাভেটর কেনা হচ্ছে। ১৮টি ড্রেজার রয়েছে আমাদের। এবছর কেনা হবে আরও তিনটি। পর্যায়ক্রমে ২০১৯ সালের মধ্যে আমাদের ড্রেজার সংখ্যা হবে ৪১।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ও দিকনির্দেশনায় ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হতে যাচ্ছি আমরা। এ লক্ষ্যে নদী খনন, নদীরক্ষা কমিশন, নতুন বন্দর নির্মাণ, যাত্রীদের সুবিধার্থে স্টিমার ও উদ্ধারকারী জাহাজ সংগ্রহের কাজ বর্তমান সরকারই করছে। এ আমলেই নতুন ১৭টি ফেরি নির্মাণ হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় চাঁদপুরে অত্যাধুনিক নদীবন্দরসহ নতুন লঞ্চ ও স্টিমারঘাট নির্মাণ করা হচ্ছে।

বন্দরবার্তা

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমুদ্র-বাণিজ্যের পরিধি ও ক্ষেত্র দুটোরই সম্প্রসারণ ঘটছে প্রতিনিয়ত। স্বভাবতঃ এসব খাতে দক্ষ কর্মশক্তির চাহিদাও বাড়ছে সেই অনুপাতে। ঘটনাটি আমাদের মতো মেধা ও শ্রমনির্ভর একটি দেশের জন্য দারুণ সম্ভাবনাময় ও আশাব্যঞ্জক। বাংলাদেশের মেরিটাইম খাতে মেধাবী জনশক্তি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন?

নৌপরিবহন মন্ত্রী

বর্তমান দুনিয়া প্রতিযোগিতার দুনিয়া। এখানে টিকতে চাইলে দক্ষতা আর মেধার জোরেই টিকে থাকতে হয়। সে বিচারে আমাদের তরুণরা বিশ্বের যেকোনো দেশের সঙ্গে পাল্লায় সমকক্ষ। নাবিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের আইএসও ৯০০১:২০০৮স্বীকৃতি পেয়েছে ২০১৪ সালে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণে গড়ে ওঠা চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমি থেকে এ বছর ৫০তম ব্যাচের স্নাতক হলো আড়াই শশিক্ষার্থীর।

এখন পর্যন্ত এখান থেকে স্নাতক হয়ে বেড়িয়েছে চার হাজারের উপর শিক্ষার্থী। সাফল্য আর সুনামের সাথে তারা কাজ করছে দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তের বড় বড় প্রতিষ্ঠানে। এ খাতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার কথা মাথায় রেখে দেশের বিভিন্ন স্থানে নতুন চারটি মেরিন একাডেমি গড়ে তোলা হচ্ছে শিগগিরই।

বন্দরবার্তা

ভারত, নেপাল, ভূটান, মিয়ানমারের মতো প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ও ত্রিপাক্ষিক আমদানি-রপ্তানি বানিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে আপনার মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। বেনাপোল এবং ভোমরাসহ দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দও  পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে কী ধরনের কার্যক্রম রয়েছে?

নৌপরিবহন মন্ত্রী

স্থলবন্দরগুলোর উন্নয়নে ব্যাপক উদ্যোগী হচ্ছে বর্তমান সরকার। বেনাপোল বন্দর আধুনিকায়নের লক্ষ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক অব্যবস্থাপনা রোধে শিল্পপুলিশ নিয়োগ হতে যাচ্ছে সেখানে। কার্যক্ষম উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমি আশাবাদী বেনাপোলে চলমান রপ্তানি টার্মিনাল, যাত্রী টার্মিনাল, আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনাল এবং ভারতের সাথে সরাসরি সংযুক্ত লিংক রোড নির্মাণ শেষ হলে বন্দরের পণ্য হ্যান্ডলিং ও যাত্রীসেবার মান বাড়বে, পাশাপাশি আয় বাড়বে বহুগুণে।

বন্দরবার্তা

বিভিন্ন কারণে প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছিল দেশের দ্বিতীয় প্রধান সমুদ্রবন্দর মংলা। যদিও সময়োচিত পদক্ষেপের কারণে মুমূর্ষু পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটিয়ে আবারও লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে তারা। মংলা বন্দরের সামর্থ্য বাড়াতে কী ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে আপনাদের?

নৌপরিবহন মন্ত্রী

মংলা বন্দরের প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে দায়িত্ব গ্রহণের পরই আন্তরিক যত্নবান হয়েছে সরকার। ফলে গত বছর ৬০ কোটি টাকার  ওপরে লাভ করেছে এ বন্দর। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মংলা বন্দরের উন্নতির জন্য যে কর্মধারা আরম্ভ করেছিলেন পরবর্তী অনেকেই সে ধারাবাহিকতা রক্ষা করেনি। ফলে একসময় দারুণ দুরবস্থার মধ্যে পরে গিয়েছিল এ বন্দর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সক্রিয় নির্দেশনায় নতুন গতি ফিরে এসেছে বন্দরের সর্বস্তরের কাজেকর্মে। পাশাপাশি, মংলা বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। মংলার সাথে সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। প্রথমবারের মতো দুটি ড্রেজার আনা হয়েছে চ্যানেলের নব্যতা বজায় রাখার জন্যে। ঢাকার সাথে যোগাযোগের জন্যে নতুন দুটি স্টিমার নির্মাণ করা হচ্ছে, চলাচল শুরু করবে আগামী বছর থেকেই।

বন্দরবার্তা

তথ্যসমৃদ্ধ অনেক কিছুই জানা হলো আপনার সঙ্গে আলোচনায়। আমাদের সময় দেয়ার জন্যে বন্দরবার্তার পক্ষ থেকে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন।

নৌপরিবহন মন্ত্রী

আপনাদেরও ধন্যবাদ।

জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।

বাংলাদেশ দীর্ঘজীবী হোক।

জীবনী-সংক্ষেপ

নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এমপির জন্ম ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারী মাদারীপুরে সম্ভ্রান্ত পরিবারে। তার পিতা অ্যাডভোকেট মৌলভী আসমত আলী খান এলাকার সর্বজনশ্রদ্ধেয় শিক্ষানুরাগী এবং সংসদ সদস্য ছিলেন।

১৯৬৬ সালে এসএসসি, ১৯৬৮ সালে এইচএসসির পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন জনাব শাজাহান খান। ছাত্র রাজনীতি শুরু ১৯৬৪ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে মাদারীপুর নাজিম উদ্দিন কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস এবং ভিপি নির্বাচিত হন। বর্তমানে জাতীয় শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নির্বাহী সভাপতি, গার্মেন্টস শ্রমিক সমন্বয় পরিষদেও আহ্বায়ক এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চের সভাপতি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান ভারতের দরাদুনে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, ভারত, নেপাল, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নিউজিল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, জাপান, কেনিয়া, থাইল্যান্ড, ইতালি, কোরিয়া, চীন, হংকং, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানী, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড এবং সৌদি আরব ভ্রমণ করেছেন। বিবাহিত এবং এক কন্যা ও দুই পুত্র সন্তানের জনক। জনাব শাজাহান খানের স্ত্রী সৈয়দা রোকেয়া বেগম একজন কলেজ শিক্ষিকা এবং সমাজসেবী।

জনাব শাজাহান খান ২৯ ডিসেম্বর, ২০০৮ নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ৩১ জুলাই, ২০০৯-এ মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন এবং নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। তিনি ২১ নভেম্বও, ২০১৩ নির্বাচনকালীন অন্তবর্তী মন্ত্রিসভায় নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পঞ্চমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্তি পান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here