“আমাদের রূপকল্প হচ্ছে বিশ্বমানের বন্দর ও নৌপরিবহন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা”

মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী কর্মজীবন শুরু করেন ১৯৯১ সালে বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার হিসেবে। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার পর্যন্ত মাঠ প্রশাসনের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে দায়িত্ব পালন ছাড়াও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগে অতিরিক্ত সচিব হিসেবেও কাজ করেন। ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি তিনি যোগদান করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে সচিব হিসেবে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে গত কয়েক মাসে তাঁর কাজের অভিজ্ঞতা এবং নৌপরিবহন খাতের চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও অর্জন নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেছেন বন্দরবার্তার সাথে।

এক দশক ধরেই উচ্চপ্রবৃদ্ধিতে রয়েছে বাংলাদেশ। এটা সম্ভব হচ্ছে অর্থনৈতিক নানা কর্মকা- বিশেষ করে আমদানি-রপ্তানির ওপর ভর করে। আর পণ্য বাণিজ্য তথা আমদানি-রপ্তানিতে বন্দরের রয়েছে বিশেষ ভূমিকা। দেশের নৌ এবং স্থল উভয় বন্দরই নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে। আপনার মন্ত্রণালয়ের গুরুত্ব এবং কর্মপরিধি নিশ্চয়ই প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে?

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ধারণ করে দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তৎকালীন রেল, নৌ ও সড়ক পরিবহন খাতের সমন্বয়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সৃষ্টি হয়। পরবর্তী সময়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কার্যপরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় জাতীয় স্বার্থে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে পুনর্বিন্যাসপূর্বক বন্দর, জাহাজ চলাচল ও অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৮৮ সালের জানুয়ারি মাসে বন্দর, জাহাজ চলাচল ও অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে ‘নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়’ হিসেবে নামকরণ করা হয়। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ১২টি দপ্তর ও সংস্থার মাধ্যমে নৌপথের যোগাযোগ, নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারকরণ, নাব্যতা বৃদ্ধি, নৌবন্দরসমূহের ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন, সমন্বিত ড্রেজিং কার্যক্রম, চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের উন্নয়ন, স্থলবন্দর উন্নয়ন, সমুদ্রপথে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্প্র্র্র্রসারণ এবং অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পরিম-লে দক্ষ নাবিক তৈরির দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দপ্তর ও সংস্থাসমূহ হচ্ছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, নৌপরিবহন অধিদপ্তর, মেরিন একাডেমি, ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, গভীর সমুদ্রবন্দর সেল ও পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও এই মন্ত্রণালয়ের অধীনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে এবং নৌপরিবহনমন্ত্রীর নির্দেশনায় সমুদ্রসম্পদ আহরণ এবং এ সংক্রান্ত স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত কর্মপরিকল্পনা নিয়ে ‘ব্লু-ইকোনমি’ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে অনেকগুলো দপ্তর এবং সংস্থা কাজ করছে। এতগুলো দপ্তর/সংস্থার মধ্যে সমন্বয় রক্ষা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। মন্ত্রণালয় কীভাবে এটা সম্ভব করছে?

আগেই বলেছি ১২টির মতো দপ্তর এবং সংস্থা নিয়ে এই মন্ত্রণালয়ের কাজ। এই মন্ত্রণালয়ের কাজগুলোর মধ্যে আছে নদীবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দরসমূহের ব্যবস্থাপনা, বাতিঘর ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন ও সংরক্ষণ; নাব্যতা রক্ষাকল্পে নৌপথ ড্রেজিং, নিরাপদ নৌ-চলাচলের জন্য বয়া লাইটেড নির্দেশিকা ও পিসি পোল স্থাপন; নৌ-বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও সহযোগিতা; অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন ও জাহাজ চলাচল, মেরিন সার্ভিসেস এবং নিরাপদ নৌ-চলাচল নিশ্চিতকরণ; অভ্যন্তরীণ নৌপথের নাব্যতা উন্নয়ন ও সংরক্ষণ; যান্ত্রিক নৌযান ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ, নৌযান জরিপ ও রেজিস্ট্রেশন; সামুদ্রিক জাহাজ চলাচল ও নেভিগেশন; নৌবাণিজ্য জাহাজ সম্পর্কিত

প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ; মূল ভূখ- ও দ্বীপসমূহের মধ্যে এবং অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ; মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিষয়াদি সমন্বয় ও গবেষণা; জাহাজ চলাচল ও নেভিগেশন সম্পর্কিত আইন প্রণয়ন; আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের সাথে যোগাযোগ এবং বিভিন্ন দেশ ও বিশ্ব সংস্থার সাথে চুক্তি ও স্মারক সম্পর্কিত বিষয়াদি; আদালতে গৃহীত ফি ব্যতীত মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন চার্জ সম্পর্কিত বিষয়াদি ছাড়াও রয়েছে অনেক কর্মযজ্ঞ। তবে আমাদের রূপকল্প হচ্ছে বিশ্বমানের বন্দর, মেরিটাইম ও নৌপরিবহন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা; আর এ মন্ত্রণালয়ের অভিলক্ষ্য হচ্ছে সমুদ্র, নৌ ও স্থলবন্দরসমূহের আধুনিকায়ন, নৌপথের নাব্যতা সংরক্ষণ, মেরিটাইম সেক্টরে দক্ষ জনবল সৃষ্টি, সাশ্রয়ী ও নিরাপদ যাত্রী ও পণ্য পরিবহন এবং বৈদেশিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে সহায়তাকরণ, সুতরাং রূপকল্প এবং অভিলক্ষ্যের প্রতি দৃঢ়তা থাকলে সমন্বয় সহজ হয়, সাফল্য আসে।

উন্নয়নের চালিকাশক্তি হিসেবে বিশ্বজুড়েই গুরুত্ব বাড়ছে মেরিটাইম তথা বন্দর খাতের। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। বন্দরের সামর্থ্য বৃদ্ধি এবং দক্ষতা নিশ্চিত করার বিষয়টি সামনে রেখে বহুমাত্রিক উন্নয়নের কী ধরনের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে? নৌপরিবহনে আঞ্চলিক হাব হিসেবে বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে কীভাবে দেখছেন?

উন্নয়নশীল দেশে অভিগমনের পর ২০৪১ সালে উন্নত দেশের কাতারে প্রবেশের লক্ষ্য নিয়ে আমরা এগোচ্ছি। সেই লক্ষ্য সামনে রেখে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও জ্বালানি সেক্টরে বেশকিছু মেগা প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ ছাড়া সরকার শতাধিক ইজেড, এসইজেড এবং ইপিজেড স্থাপন করছে, যাতে করে বড় আকারের আমদানি করা মালামাল সহজে এবং কম সময়ে তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। আমদানি পণ্যগুলো আমাদের জলসীমানায় পৌঁছানোর পর থেকে চট্টগ্রাম বন্দর মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। আমদানি বা রপ্তানি পণ্যের ডেলিভারি এবং গ্রহণের জন্য বন্দরটি সার্বক্ষণিক নিয়োজিত। এবং মনে রাখা দরকার, যদি আমরা দেশে টেকসই উন্নয়নের গতি বজায় রাখতে চাই, তাহলে পণ্যের ডেলিভারি দ্রুত এবং কার্যকরী হওয়া উচিত। এই সক্ষমতা অর্জনের জন্য আমরা মাল্টিমোডাল হাবসহ হিন্টারল্যান্ড সংযোগ স্থাপনের পাশাপাশি বন্দরের বিদ্যমান অবকাঠামো পুনর্নির্মাণের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করেছি। একই সাথে এটিও মনে রাখতে হবে যে, বিশ্বব্যাপী মেরিটাইম সংস্থাগুলো পরিবেশগত সমস্যা এবং কার্যকর জালানি ব্যবহারের ওপর বেশি সংবেদনশীল হয়ে উঠছে। আমাদের সমগ্র নির্মাণযজ্ঞে আমরা মূলত পরিবেশের যাতে কোনো রকম ক্ষতি না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখছি। আবার এতে করে অর্থনীতির চাকা যাতে গতিশীল থাকে তাতেও আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকছে।

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ২০২০ ছিল নজিরবিহীন একটা বছর। মহামারির শুরুর দিকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অনেক বন্দরের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। বাংলাদেশের বন্দর বিশেষ করে চট্টগ্রামের কথা বললে ব্যতিক্রমী চিত্র চোখে পড়ে। মহামারির মধ্যেও একদিনের জন্যও বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। মহামারির ধাক্কা সামলে দ্রুতই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এমনকি অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধিও ধরে রেখেছে। কীভাবে এটা সম্ভব হলো?

মহামারির মধ্যেও আমরা আমদানি-রপ্তানি সচল রাখতে পেরেছি। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সময়োপযোগী ও উদ্ভাবনী কৌশল এবং তার বাস্তবায়নের ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থাও এক্ষেত্রে সহযোগীর ভূমিকা পালন করেছে। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষের কথাই সবার আগে

বলতে হবে। সমুদ্রগামী জাহাজের মাধ্যমে ভাইরাসটি যাতে দেশে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেজন্য সংক্রমণের শুরুর দিকেই বিশেষ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

আবার কনটেইনারজটের কারণে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে যাতে বিঘœ না ঘটে সেজন্য এপ্রিলের শেষ দিকে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। কনটেইনারজট সামলাতে প্রয়োজনীয় যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয় টাস্কফোর্সকে। এর সুফলও পাওয়া যায়। আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের স্বাভাবিক গতি ধরে রাখা সম্ভব হয়। এছাড়া আমদানিকারকরা যাতে বন্দর চত্বর থেকে কনটেইনার খালাস করেন, সেজন্য স্টোর রেন্টে ছাড় দেওয়া হয়। বন্দর সচল রাখতে কর্মীরাও সাধারণ ছুটির মধ্যে পালা করে কাজ চালিয়ে গেছেন। এসবের ফলে মহামারি সত্ত্বেও ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে চট্টগ্রাম বন্দরে কার্গো, কনটেইনার ও জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে।

মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর সম্পর্কে কিছু বলুন। ২০২৬ সালের মধ্যে বন্দরের কার্যক্রম শুরু করার ব্যাপারে আপনি কতটা আশাবাদী?

সাড়ে ১৮ মিটার চ্যানেল তৈরির কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। ব্রেক ওয়াটারও প্রস্তুত। চ্যানেলটি দিয়ে মাতাবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে প্রথমবারের মতো জাহাজ ভিড়েছে। প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে সেপ্টেম্বরেই জাপানের নিপ্পন কোয়ের সাথে চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে এবং তারা কাজও শুরু করেছে। তাই বলা যায়, সবকিছু ঠিকমতোই এগোচ্ছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যেই দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর হিসেবে মাতারবাড়ীর কার্যক্রম আমরা শুরু করতে পারব বলে আশা করছি।

মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর হলে ব্যবসায়ীরা বিশেষ কী সুবিধা পাবেন?

বাংলাদেশের রপ্তানির ক্ষেত্রে বর্তমানে প্রথমে ফিডার ভেসেলে করে পণ্য প্রথমে সিঙ্গাপুর বা কলম্বো বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মাদার ভেসেলে করে রপ্তানি গন্তব্যে সেগুলো পৌঁছে দেওয়া হয়। একইভাবে আমদানি পণ্যও প্রথমে সিঙ্গাপুরে আসে এবং সেখান থেকে ফিডার ভেসেলে করে চট্টগ্রাম বন্দরে আনা হয়। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে মাদার ভেসেল বন্দরটিতে ভিড়তে পারবে। সেখান থেকে লাইটারেজ জাহাজে করে পণ্য চট্টগ্রাম বন্দর বা অন্যান্য এলাকায় নিয়ে যাওয়া যাবে। এতে আমদানি-রপ্তানিতে সময় অনেক সাশ্রয় হবে। এতে ব্যবসায়ী বিশেষ করে রপ্তানিকারকরা সুবিধা পাবেন। এ কারণে রপ্তানির ক্ষেত্রেও লিড টাইম কমিয়ে আনা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

অভ্যন্তরীণ ও প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে স্থলবন্দরগুলোর ভূমিকাও কম নয়। দেশের স্থলবন্দর এবং সমুদ্রবন্দরের জন্য কী ধরনের নীতিমালার কথা বিবেচনায় রয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়?

অনেকেই অবগত আছেন যে, আঞ্চলিক বাণিজ্য পরিচালনার জন্য বাংলাদেশে ২৩টি স্থলবন্দর রয়েছে এবং দেশটির সাথে ভারতের প্রায় ৪ হাজার কিমি সীমানা রয়েছে। গত বছর সরকার সিলেট, সাতক্ষীরায় এবং খাগড়াছড়ি জেলায় নতুন তিনটি স্থলবন্দরের অবকাঠামো নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে ভারতের সাথে আঞ্চলিক যোগাযোগের মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে পারে। একই পরিকল্পনার অধীনে বেনাপোল স্থলবন্দরকেও আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে। আমরা এই বন্দরগুলোর মধ্যে খোলা ইয়ার্ড, গুদাম এবং অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করছি যাতে যোগাযোগ ও ট্র্যাফিক সহজ হয়। প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সংযোগ স্থাপনের বিষয়টি সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। অন্যদিকে ভুটান ও নেপাল দেশের চট্টগ্রাম বন্দর এবং অন্যান্য সমুদ্রবন্দরের সুবিধা নিতে গভীর আগ্রহ দেখিয়েছে। জাতীয় নীতি ও আঞ্চলিক বাণিজ্যের সুবিধার্থে স্থলবন্দর এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর সমন্বিত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

পরিবহন খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ এর লজিস্টিকস এবং হিন্টারল্যান্ড সুবিধা। বর্তমান হিন্টারল্যান্ড ব্যবস্থা পরিবহন খাতে কীভাবে ভূমিকা রাখছে? বন্দরগুলোর হিন্টারল্যান্ড সংযোগ বৃদ্ধিতে কী কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে?

মেরিটাইম বন্দর উন্নয়নের সমান্তরালে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্রমবর্ধমান প্রবণতার সাথে গতিশীল রাখতে, সড়ক, রেল এবং অভ্যন্তরীণ নৌপথ পরিবহনের (বিআইডব্লিউটিএ) ওপর জোর দিতে হয়। হিন্টারল্যান্ড যোগাযোগ মূলত যাতায়াত ব্যবস্থা ও বিভিন্ন ধরনের পরিবহনের উপর নির্ভরশীল; তবে খরচ, সময় এবং নিরাপত্তা বিবেচনায় প্রাধান্য পায়। বাংলাদেশ পণ্য পরিবহনের বড় অংশ অর্থাৎ ৮০ শতাংশ ঘটে সড়কপথে, ১৬ শতাংশ নৌপথে এবং ৪ শতাংশ রেলপথে। নদীমাতৃক দেশ হিসেবে আমাদের নৌপথের ব্যবহার বাড়াতে হবে, সড়কপথের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে হবে এবং রেলপথে পণ্য ব্যবহার সহজলভ্য করতে হবে। এ লক্ষ্যে আমাদের বিভিন্ন মেগা প্রজেক্টসহ অসংখ্য কার্যক্রম রয়েছে। অচিরেই বাংলাদেশের হিন্টারল্যান্ড যোগাযোগ বিস্তৃত ও সহজ হবে।

প্রতিবেশী দেশের সাথে সমুদ্রসীমা মীমাংসা হওয়ায় বাংলাদেশ এখন একটি বিশাল সমুদ্র এলাকার অধিকারী। এই সমুদ্র এলাকায় ‘ব্লু-ইকোনমি’ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত কর্মপরিকল্পনা সাজিয়েছে। এ পরিকল্পনায় কী থাকছে?

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দূরদর্শী কূটনৈতিক সাফল্যের কারণে মূলত বাংলাদেশের পক্ষে এই রায় এসেছে। এই রায়ের ফলে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের বেশি টেরিটোরিয়াল সমুদ্র এলাকা, ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানের তলদেশে অবস্থিত সব ধরনের প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ তাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চাহিদা মেটাতে তাকিয়ে আছে সমুদ্রসম্পদের দিকে।

২০৫০ সালে পৃথিবীর জনসংখ্যা হবে প্রায় ৯০০ কোটি। গবেষকরা বলছেন, বিপুল এই জনগোষ্ঠীর খাবার জোগান দিতে তখন সমুদ্রের মুখাপেক্ষী হতে হবে। আর এ কারণেই ব্লু-ইকোনমি বা সমুদ্রসম্পদনির্ভর অর্থনীতিকে গুরুত্বারোপ করার তাগিদ দিচ্ছেন গবেষক ও বিশ্লেষকরা। বিশে^র ৪৩০ কোটি মানুষের ১৫ ভাগ প্রোটিনের জোগান দিচ্ছে সামুদ্রিক মাছ, উদ্ভিদ ও জীবজন্তু। পৃথিবীর ৩০ ভাগ গ্যাস ও জ¦ালানি তেল সরবরাহ হচ্ছে সমুদ্রতলের বিভিন্ন গ্যাস ও তেলক্ষেত্র থেকে। সমুদ্রের বুকে প্রাপ্ত অনবায়নযোগ্য সম্পদের মধ্যে রয়েছে তেল-গ্যাসসহ নানাবিধ খনিজ পদার্থ, যেমন ফসফরাইট ডিপোজিট, পলিমেটালিক ডিপোজিট, সালফাইড, ম্যাঙ্গানিজ নডিউলস ও ক্রাস্ট, গ্যাস হাইড্রেট, এভাপোরাইট ইত্যাদি। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা সমমূল্যের ন্যূনতম প্রায় ১ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন টন খনিজ বালুর সমাহার রয়েছে বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলে। এখানে মোট ১৭ প্রকারের খনিজ বালুর সন্ধান পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ৮টির অর্থনৈতিক সম্ভাবনা রয়েছে; যেমন ইলমেনাইট, জিরকন, রুটাইল, ম্যাগনেটাইট, লিউকোক্সিন, কিয়ানাইট, মোনাজাইট। বিশ্ব ব্যবহৃত শতকরা ৫০ ভাগের বেশি ম্যাগনেশিয়াম সামুদ্রিক পানি থেকে সংগ্রহ করা হয়। এই প্রাকৃতিক উৎস থেকে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ তৈরি সম্ভব। এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার যৌগ সমুদ্র থেকে পাওয়া গেছে। পরবর্তী প্রজন্মের ওষুধ এই সমুদ্র থেকেই পাওয়া যাবে বলে বিজ্ঞানীরা আশা করছেন। এসব লক্ষ্য সামনে রেখে আমরা সমুদ্রবন্দর ও গভীর সমুদ্রবন্দরসমূহের উন্নয়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করে চলেছি, কোস্টাল শিপিংকে কার্যকরী করে অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখাসহ ব্লু-ইকোনমিকে সামনে রেখে দ্বিপক্ষীয় এবং আঞ্চলিক সমঝোতা স্মারক, চুক্তি ও প্রোটকলের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক নৌবাণিজ্য সম্প্রসারণের কাজ করছি, ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি করছি।

এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে আসি। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) জ্বালানি, সার, খাদ্যশস্যসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহনের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কিন্তু সংস্থাটির বহরে জাহাজের সংখ্যা সেই অর্থে খুব বেশি নয়। বিএসসির জাহাজবহর শক্তিশালী করতে কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন?

১৯৭২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান। দেশের দুই পুঁজিবাজারেই তালিকাভুক্ত বিএসসিকে সরকার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নেতৃস্থানীয় শিপিং কোম্পানিতে উন্নীত করতে যায়। সে লক্ষ্য সামনে রেখে বহরে জাহাজের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। চীন সরকারের অর্থায়নে ছয়টি জাহাজ ইতোমধ্যেই বিএসসির বহরে যুক্ত হয়েছে এবং এগুলো সমুদ্রপথে পরিচালিতও হচ্ছে। সংগৃহীত জাহাজগুলোর মধ্যে তিনটি প্রডাক্ট ট্যাংকার ও তিনটি বাল্ক ক্যারিয়ার।

বহর শক্তিশালী করতে আগামীতে জাহাজ ক্রয়ের আরও বেশকিছু প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। ৮০ হাজার টনের দুটি মাদার বাল্ক ক্যারিয়ার ও ১০ থেকে ১৫ হাজার টন ক্ষমতাসম্পন্ন ১০টি বাল্ক ক্যারিয়ার ক্রয় প্রকল্প এর মধ্যে অন্যতম। এর বাইরে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের ক্রুড অয়েল পরিবহনের জন্য প্রতিটি ১ লাখ টন থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার টন ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি মাদার ট্যাংকার ক্রয়ের প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের আমদানি করা ডিজেল ও জেট ফুয়েল যাতে পরিবহন করা যায়, সেজন্য কেনা হচ্ছে ৮০ হাজার টন ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি মাদার প্রডাক্ট অয়েল ট্যাংকার।

দেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। আমদানি করা এই এলএনজি যাতে নিজস্ব জাহাজে পরিবহন করা যায়, সেজন্য প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার ঘনমিটারের দুটি, প্রায় ১ লাখ ৭৪ হাজার ঘনমিটারের দুটি এবং প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার ঘনমিটারের আরও দুটি এলএনজি ভেসেল বিএসসির বহরে যুক্ত করার প্রাথমিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

শ্রীলঙ্কাসহ বিমসটেকের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ফিডার সার্ভিস চালুর বিষয়ে আলোচনা চলছে। এটি বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টিইইউ ধারণক্ষমতার চারটি নতুন সেলুলার কনটেইনার জাহাজ ক্রয়ের আরও একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। সেলুলার কনটেইনার জাহাজগুলো ডেনমার্ক সরকারের সহায়তায় নির্মিত হবে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে নিঃসন্দেহে বলা যায়, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ আন্তর্জাতিক শিপিং কোম্পানিতে উন্নীত হবে।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাগুলোর মধ্যে অন্যতম নৌপরিবহন অধিদপ্তর। নাবিকদের সার্টিফিকেট অব কম্পিট্যান্সি (সিওসি),সার্টিফিকেট অব প্রোফিসিয়েন্সি (সিওপি), কন্টিনিউয়াস ডিসচার্জ সার্টিফিকেট (সিডিসি) ও অভ্যন্তরীণ যোগ্যতার সনদসহ বিভিন্ন সেবা দিয়ে থাকে অধিদপ্তর। প্রথাগত পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে এসব সেবা ডিজিটাল করা এখন সময়ের দাবি। এ ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগ কী?

বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের সেবাসমূহ ডিজিটাল হওয়াটা খুবই জরুরি, যাতে তা সহজ ও কার্যকরী হয়। সে লক্ষ্যে আমরা অনেক দূর এগিয়েছিও। সমুদ্রগামী ও অভ্যন্তরীণ জাহাজের নাবিকদের সিওসি এবং সিওপির মতো সনদের আবেদন এখন অনলাইনেই গ্রহণ করা হচ্ছে। সেই সাথে সনদ প্রণয়ন ও সনদ প্রস্তুতের তথ্য মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে আবেদনকারীর কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি নাবিকদের পরীক্ষাসহ বিভিন্ন ধরনের আবেদন, সেইফ ম্যানিং সনদ, শিপ সার্ভেয়ার সনদ ও অন্যান্য বিষয়ে এনওসির জন্য অনলাইনে আবেদন দাখিলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নাবিকদের সাইন অন, সাইন অফ কার্যক্রমও অনলাইনে সম্পাদনের পদ্ধতি চালু করা হয়েছে।

সিডিসি জালিয়াতি যাতে বন্ধ হয়, সে পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। জালিয়াত  রোধকল্পে বিশেষ নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য যেমন আল্ট্রা ভায়োলেট, মাইক্রো সিকিউরিটি লাইন, অ্যান্টি-ফটোকপি ও কুইক রেসপন্স কোডযুক্ত কাগজে হাতে লেখার পরিবর্তে মেশিন প্রিন্টেড সিডিসি প্রবর্তন করা হয়েছে।

যে খাতই হোক না কেন, সেখান থেকে সাফল্য অর্জন করতে দক্ষ জনশক্তির বিকল্প নেই। দেশে নৌপরিবহন খাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে আপনারা কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন?

দক্ষ জনশক্তি তৈরি করার জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে মেরিন একাডেমি এবং ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি ৪ দশক ধরে নাবিক ও নৌকর্মী প্রস্তুত করে আসছে। এছাড়া দেশের বেশকিছু মেরিটাইম ইনস্টিটউট এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ে মেরিটাইম সম্পর্কিত বিষয় পড়ানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবং সমুদ্রবিজয়ের পর ২০১৩ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে প্রথম মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সুতরাং, দক্ষ জনশক্তির সংকট ভবিষ্যতে আর থাকবে না।

আমাদের বর্তমান জাতীয় নৌপরিবহন নীতিমালাটি প্রণীত হয়েছে আজ থেকে প্রায় দুই দশক আগে। অন্যদিকে শিপিং খাতের অবকাঠামো ও বৈশিষ্ট্যগত ক্ষেত্রে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ঘটেছে ব্যাপক পরিবর্তন। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন নতুন একটি নৌপরিবহন নীতিমালা প্রণয়নের সময় হয়েছে আমাদের। আপনার কী মত এ বিষয়ে?

আমাদের বিদ্যমান নৌপরিবহন নীতিমালা আপডেট করা খুব বেশি প্রয়োজন, সেই সাথে আমাদের অর্থনীতির গতিশীলতার প্রয়োজনে নৌপরিবহন শিল্পটিকে উৎসাহ দিয়ে এটি উদারীকরণের কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশ নদীসমৃদ্ধ একটি উপকূলীয় দেশ; সুতরাং স্থানীয় পণ্য, যাত্রী পরিবহন বা আন্তর্জাতিক ফিডার শিপিংয়ের জন্য একটি দৃঢ় এবং বাংলাদেশের উপযোগী নৌপরিবহন নীতিমালার প্রয়োজন বেড়েই চলেছে। নীতিমালাটি দেশের বাণিজ্য উন্নয়ন এবং রপ্তানি আয় বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন। গত দশকে নৌপরিবহন ব্যবস্থা বাংলাদেশের কর্মসংস্থান সৃষ্টির একটি উৎস হিসেবে কাজ করেছে। এছাড়া জাতীয় রাজস্বের প্রধান অবদান রাখার জন্য এবং আমাদের অর্থনীতির আন্তর্জাতিকীকরণের জন্য চালক হিসেবে কাজ করার জন্য নৌপরিবহন ব্যবস্থার অবদান অনস্বীকার্য। আমি বিশ্বাস করি, সরকারের চিন্তাভাবনা আছে এবং অবশ্যই এই নীতিমালা-সংক্রান্ত সংকটের খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সমাধান হবে।

বন্দরবার্তাকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

আপনাকেও ধন্যবাদ। বাংলা ভাষায় মেরিটাইম চর্চাকে একটি সুদৃঢ় ভিত্তিতে দাঁড় করাতে গত বছর ধরে বন্দরবার্তা যে নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here