এডওয়ার্ড লয়েড

সপ্তদশ শতকের শেষভাগের কথা। সে সময় লন্ডনের মার্চেন্টদের মধ্যে খুব কম জনেরই নিজস্ব অফিস অথবা কাউন্টিং-হাউস ছিল। তাদের বেশির ভাগই লেনদেন সম্পন্ন করতেন রয়েল এক্সচেঞ্জে। ব্যবসা-বাণিজ্যের হালচাল সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক খবর পাওয়ার সুযোগ তখন ছিল না। সিংহভাগ ক্ষেত্রে খবর ও তথ্য সংগ্রহ হতো সামাজিক বিভিন্ন সমাবেশ ও আলাপচারিতার মাধ্যমে।
এমনই একসময়ে লন্ডনের টাওয়ার স্ট্রিটে চালু হলো একটি কফিশপ। উদ্যোক্তা ৪১ বছর বয়সী এডওয়ার্ড লয়েড। দ্রæত লয়েডের কফি হাউসটি পরিণত হলো মার্চেন্টদের মিলনমেলায়। কফি হাউসটি প্রথমে শিপিং খাতসংশ্লিষ্ট সবার কোলাহলেই মুখর থাকত। পরে সেখানে মেরিটাইম অকশন ও সামুদ্রিক বিমাসংক্রান্ত কার্যক্রম প্রাধান্য পায়।
ধারণা করা হয় এডওয়ার্ড লয়েডের আদিভিটা ছিল ওয়েলসে। সেখান থেকে ১৬৮০ সালের দিকে তিনি লন্ডনের টাওয়ার স্ট্রিটে বসবাস শুরু করেন। ১৬৮৮ সালে কফি হাউসটি চালু করেন তিনি। এর বছর তিনেক পর লয়েড ১৬ লম্বার্ড স্ট্রিটে চলে যান। সে সময় এটি ছিল সমুদ্র বাণিজ্য কার্যক্রমের প্রাণকেন্দ্র।
মেরিটাইম খাতে আনুষ্ঠানিক ও বিশ্বাসযোগ্য সংবাদ প্রবাহের যে ঘাটতি ছিল, লয়েড সেটিকেই পুঁজি করে ১৬৯৬ সালে লয়েড’স নিউজ নামে একটি সংবাদপত্র প্রকাশ করা শুরু করেন। সপ্তাহে তিনদিন প্রকাশ হতো সেটি। এক বছরের মাথায় সংবাদপত্র প্রকাশ বন্ধ হয়ে গেলেও লয়েডের তথ্য সরবরাহ বন্ধ হয়নি। তার গ্রাহকরা ঠিকই বিভিন্ন গোপন সোর্সের কাছ থেকে পাওয়া লয়েডের খবরগুলো সংগ্রহ করে নিতেন।
লয়েড ও তার কফি হাউস এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল যে ১৭১০ সালে লন্ডনের ল্যাংবোর্ন ওয়ার্ডের কমন কাউন্সিলর হিসেবে মনোনয়নের জন্য তার নাম প্রস্তাব করা হয়। অবশ্য শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি শেষ পর্যন্ত এই দায়িত্ব নিতে পারেননি। ১৭১৩ সালের ১৫ ফেব্রæয়ারি এডওয়ার্ড লয়েড মৃত্যুবরণ করেন।

Facebook Notice for EU! You need to login to view and post FB Comments!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here