টুইস্ট লক

সাম্প্রতিক সময়ে সমুদ্র পরিবহন খাতের অন্যতম আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে সাগরে কনটেইনার হারিয়ে যাওয়া। একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর গড়ে ১ হাজার ৪০০ কনটেইনার সাগরে হারিয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক মাসে এ সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। কী কারণে এমনটি হচ্ছে, তা খাতসংশ্লিষ্টদের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ এতে আর্থিক ক্ষতি তো রয়েছেই, পাশাপাশি সাগরে পড়ে যাওয়া ভাসমান কনটেইনার জাহাজ চলাচলে নিরাপত্তাঝুঁকি তৈরি করে। এছাড়া জলজ পরিবেশের জন্যও তা হুমকিস্বরূপ।

যেকোনো দুর্ঘটনা অথবা উত্তাল আবহাওয়ায় সাগরে কনটেইনার পড়ে যাওয়া ঠেকানো কঠিন একটি কাজ। তবে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কনটেইনারগুলোকে স্থিরভাবে সারিবদ্ধ থাকতে সহায়তা করে যে যন্ত্রাংশটি, সেটি হলো টুইস্ট লক। এটি হলো ম্যাচিং কর্নার কাস্টিংযুক্ত এক ধরনের লক, যা একটি অন্যটির সঙ্গে মিলে স্ট্যান্ডার্ডাইজড কানেক্টর সিস্টেম তৈরি করে।

কনটেইনার টুইস্ট লকগুলো আইএসও ১১৬১:১৯৮৪ স্ট্যান্ডার্ড মেনে তৈরি করা হয়। আন্তর্জাতিক রুটে পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত আইএসও-স্ট্যান্ডার্ড কনটেইনারগুলোকে সংযুক্ত ও স্থিরভাবে আটকে রাখার কাজে এই লকগুলো খুবই কার্যকর। বিশেষ করে ৪০ ফুটের কর্ম দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট কনটেইনারগুলোকে একটি আরেকটির সঙ্গে দৃঢ়ভাবে আটকানোর জন্য আইএসওর মানদ- অনুযায়ী টুইস্ট লক ব্যবহার করা হয়।

টুইস্ট লক আবিষ্কার হয় সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনে কনটেইনার প্রচলনের প্রায় সমসাময়িক সময়ে। ১৯৫০-এর দশকে ওয়াশিংটনের পরিবহন প্রকৌশলী কিথ ট্যান্টলিঞ্জার এই লক আবিষ্কার করেন। আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ এই যন্ত্রাংশ কনটেইনার পরিবহন খাতে অসাধারণ অবদান রেখে চলেছে। এর সর্বজনীন ব্যবহারের গুরুত্ব অনুধাবন করে ট্যান্টলিঞ্জার তার পেটেন্টকে রয়াল্টি-ফ্রি করে দেন, যার ফলে টুইস্ট লক এখন কনটেইনার পরিবহন খাতের অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গে পরিণত হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here