গ্যান্ট্রি ক্রেন

আধুনিক যুগে সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহন বহুগুণ বেড়েছে। বিশেষ করে কনটেইনার পরিবহনের চাহিদা এতটাই বেড়েছে যে, ২০২১ সালে তীব্র কনটেইনার-সংকট তৈরি হয়। এই অবস্থায় কনটেইনার ও অন্যান্য পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রয়োজন বন্দরের হ্যান্ডলিংয়ে গতিশীলতা। আর এই প্রয়োজন মেটাতে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করে যে যন্ত্র, তা হলো গ্যান্ট্রি ক্রেন।

গ্যান্ট্রি ক্রেন হলো দানবাকার এক ধরনের ক্রেন, যেগুলো গাড়ির যন্ত্রাংশ থেকে শুরু করে ভারী সব পণ্য জাহাজ থেকে খালাসে সাহায্য করে। এগুলো অনেকটা ওভারহেড ক্রেন বা ব্রিজ ক্রেনের মতো। উভয় ধরনের ক্রেনই স্ট্র্যাডল পদ্ধতিতে অর্থাৎ পাগুলোর মাঝখানে পণ্য তুলে স্থানান্তর করে। তবে গ্যান্ট্রি ক্রেন ও ওভারহেড ক্রেনের মধ্যে পার্থক্য হলো, গ্যান্ট্রি ক্রেনের পাগুলোর সঙ্গে চাকা লাগানো থাকে এবং সেগুলো সাধারণত একটি রেললাইন ধরে চলাচল করে। আর ওভারহেড ক্রেনের পা থাকে ফিক্সড।

গ্যান্ট্রি ক্রেন বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। যেমন শিপ-টু-শোর, ফুল গ্যান্ট্রি ক্রেন, পোর্টেবল গ্যান্ট্রি ক্রেন ইত্যাদি। বেশির ভাগ কনটেইনার টার্মিনালেই শিপ-টু-শোর গ্যান্ট্রি ক্রেন ব্যবহৃত হয়। দুটি রেললাইন বরাবর এসব গ্যান্ট্রি ক্রেন পরিচালনা করা হয়।

আধুনিক যুগে কনটেইনার জাহাজগুলোর আকার ও প্রশস্ততা দুই-ই বেড়েছে। এই অবস্থায় কনটেইনার লোডিং ও আনলোডিংয়ে গতি আনার ক্ষেত্রে শিপ-টু-শোর গ্যান্ট্রি ক্রেন খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে। সাধারণত সময় বাঁচানোর জন্য কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষেত্রে এই ধরনের একাধিক গ্যান্ট্রি ক্রেন পেয়ার অথবা টিম আকারে ব্যবহার করা হয়। প্রথম কি গ্যান্ট্রি ক্রেন তৈরি হয়েছিল ১৯৫৯ সালে।

ফুল গ্যান্ট্রি ক্রেন ভারী প্রায় সব পণ্যই তুলতে পারে। বিশেষ করে জাহাজের ইঞ্জিন তোলার কাজে শিপইয়ার্ডগুলোয় এর ব্যবহার হয় সবচেয়ে বেশি। বিশে^র সবচেয়ে শক্তিশালী গ্যান্ট্রি ক্রেন রয়েছে চীনের ইয়ানতাই র‌্যাফলস শিপইয়ার্ডে।

রাবার-টায়ারড গ্যান্ট্রি ক্রেন হলো তুলনামূলক ছোট আকারের গ্যান্ট্রি ক্রেন, যেগুলোর চাকা রাবারের তৈরি হয়। এগুলো টার্মিনালের পণ্য স্থানান্তরে ট্রাকের বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here